খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক নেতাকে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে নগরীর দৌলতপুর থানার পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকার ওই নেতার নিজ বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন।
নিহত ওই নেতার নাম, মাহবুবুর রহমান মোল্লা (৩৮)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল করিম মোল্লার ছেলে এবং দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিষয় ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়। সংঘর্ষের সময় রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরের দিন মাহবুবুরকে বহিষ্কার করে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। এরপরও তিনি নিয়মিত দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে বাসার সামনে নিজের প্রাইভেট কার পরিষ্কার করছিলেন মাহবুবুর রহমান। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে তিন দুর্বৃত্ত এসে মাহবুবুরকে প্রথমে গুলি করে এবং পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। মোটরসাইকেলে একজন হেলমেট পরা থাকলেও অপর দুজনের মাথায় হেলমেট ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর আহত অবস্থায় মাহবুবুরকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী জানান, ৫ আগস্টের পর এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মাহাবুব। মাদক বিক্রি নিয়ে এলাকার আরেকটি গ্রুপের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর জেরে আগেও কয়েকবার মাহাবুবের ওপর হামলা হয়।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী জানান, মাহাবুবের বিরুদ্ধে মাদকসহ ৮টি মামলা রয়েছে। মাদক বিক্রি নিয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সঙ্গে মাহাবুবের দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে হামলা কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে সাতটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপকমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেলে আসা তিনজনের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তারা মাহবুবুর রহমানের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য রগও কেটে দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :