সরকার নির্ধারিত দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেননি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। চামড়ার দাম না পেয়ে রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যনগরী চিটাগংসহ সারা দেশের অনেক জায়গায়ই রাস্তার ধারে বা ডাস্টবিনে পশুর চামড়া ফেলে দেওয়া হয়েছে। চামড়ার দাম না পেয়ে রাজধানীর পলাশীর মোড়ে এক ট্রাক চামড়া কে বা কারা ফেলে গেছে কেউ জানে না। গত তিন দিনে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে চামড়া পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। কেউ চামড়া পুঁতে ফেলেছেন। কেউ রাস্তায় ফেলে চলে গেছেন। আড়তদাররা নিজেদের ইচ্ছা মাফিক দামে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও অনেকে চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। আবার ছাগলের চামড়া কেনেননি কোনো আড়তদার। ফলে সংরক্ষণ উপযোগী ছাগলের চামড়ারও জায়গা হয়েছে ডাস্টবিনে।
যারা কোরবানি দেন তারা তাদের পশুর চামড়া মাদ্রাসা, এতিমখানা কিংবা লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দান করেন। এ ছাড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা টাকার বিনিময়ে বাড়ি বাড়ি থেকে চামড়া সংগ্রহ করেন। প্রতিবছরই সেই চামড়া কিনে নেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। চামড়া পচনশীল হওয়ায় তারা ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। এভাবেই চলে আসছিল বছরের পর বছর। এ বছর এতিমখানা, মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে চামড়া সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য সরকারিভাবে বিনা মূল্যে লবণ সরবরাহও করা হয়।
সরকারি সহায়তা পাওয়া চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৯টি মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং চামড়া সংরক্ষণ করেছে। তারা বলছেন, ১৫-২০ দিন কিংবা তারও পরে সন্তোষজনক দাম পেলে তারা চামড়া বিক্রি করবেন। এতে তারা লাভবান হবেন। এই ১৯টি প্রতিষ্ঠান ৮২৪টি গরুর চামড়া এবং পাঁচ হাজার ২৪৮টি ছাগলের চামড়া সংরক্ষণ করেছে।
জানা গেছে, ঈদুল আজহায় সারা দেশে এক কোটির মতো পশু কোরবানি হয়। যা বাংলাদেশের প্রধান চামড়া সংরক্ষণ করার মৌসুম। এ বছর ৮০-৮৫ লাখ চামড়া সংরক্ষণ করা হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বেশি ছিল। সেবার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫-৯০ টাকা। তার পর থেকে বিভিন্ন কারণে চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ২০১৯ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বড় ধরনের ধস নামে। ন্যূনতম দাম না পেয়ে দেশের অনেক অঞ্চলে চামড়া সড়কে ফেলে ও মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তাতে প্রায় ২৪২ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়।
ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত কোরবানি দেওয়া হয়। সেসব চামড়া আসে লালবাগের পোস্তায়। পোস্তায় চামড়া নিয়ে আসেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ফলে ঈদের দিন সব পেশার মানুষের ছুটি থাকলেও পোস্তার কর্মচারীরা ব্যস্ত থাকেন চামড়া সংগ্রহে। আড়তদাররা ঈদের দিন দুপুর থেকেই এসব চামড়া কেনা শুরু করেছে। চামড়ার দাম না থাকায় পোস্তায় বা সাভারের চামড়াশিল্পনগরীর আড়তগুলোতে ফড়িয়া কমলেও কয়েকগুণ বেড়েছে মাদ্রাসার লোকজনের আনাগোনা। তবে চামড়ার দাম না থাকায় সরবরাহ কমেছে।
মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়া আর মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ছোট ট্রাক, ভ্যানগাড়ি ও বিভিন্ন যানবাহনে চামড়া আনছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা এসব চামড়া পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনছেন। দরদামে মিললে সেসব চামড়া নামিয়ে নেওয়া হচ্ছে গুদামে। এসব কাঁচা চামড়া সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা আর সর্বোচ্চ ৯০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে কোনো কোনো চামড়া ৬০০ বা ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোস্তায় চামড়া আসার পরে প্রথমে লবণজাত করা হবে। ১০-১৫ দিন পরে এসব চামড়া সাভারের ট্যানারিগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সাধারণত বড় আকারের গরুর চামড়া ৩১-৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের গরুর ২৫ বর্গফুটের একটি লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬২৫ টাকা। পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার আড়তগুলো কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের অন্যতম বড় জায়গা। সেখানে ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের গরুর কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ ৪০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ছাগলের চামড়া। দাম নিয়ে শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। আড়ত মালিকদের সংগঠন বলছে, লোকসান এড়াতে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনবেন না তারা।
উল্লেখ্য, এ বছর চার লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ হবে হেমায়েতপুরের আড়তগুলোতে। এদিকে ঈদের পর ১০ দিন অন্য জেলার চামড়া ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।
সাভার কাঁচা চামড়া আড়ত মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এমদাদুল হক (সোহরাব) বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা সম্ভব নয়। কারণ, চামড়ার সঙ্গে লবণ ও শ্রমিক খরচ যুক্ত হবে। নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে লোকসান হবে।
গত ২৬ মে কোরবানি পশুর চামড়ার এই দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০-৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা। ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা। এ ছাড়া ঢাকায় কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২-২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এ বছর কোরবানির পশুর চামড়া আর পানির দামে কেনার সুযোগ থাকছে না। চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার ব্যাপারে জোর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে চামড়ার দামও গত বছরের তুলনায় পাঁচটা প্রতি বর্গফুটে বাড়ানো হয়েছে। কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে সারা দেশের মসজিদ-মাদরাসাগুলোতে বিনা মূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ দেওয়া হয়েছে। কোরবানির পশুর চামড়া দাম নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্তমান সরকার।
পোস্তার এমএস এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মকবুল বলেন, সোমবার যেসব গরু কোরবানি হয়েছে, সেগুলোর চামড়া আসতে শুরু করেছে। ঈদের তৃতীয় দিন কোরবানি কম হয়, তাই চামড়াও কম আসে। তবে এবছর ভালো চামড়া এসেছে। আমাদের কাছে আসা ভালো চামড়া হলে ফেরত দেই না। গত দুদিনে কিছু চামড়া ফেরত গেছে, সেটা ঢাকার বাইরের চামড়া। চামড়াগুলো দেরি করে আনায় নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সোমবারসহ গত দুদিনে আমি প্রায় ২ হাজারটি চামড়া কিনেছি। গত দুদিনের তুলনায় আজকের চামড়া ভালো, তাই দামও ভালো। আজ আমরা ছোট চামড়া ৪০০, মাঝারি ৬০০ এবং বড় ৭০০-৮০০ টাকা দরে কিনেছি। গত দুদিন গড়ে ৫০০-৬০০ টাকায় চামড়া বেচাকেনা হয়েছে।
কালাম ব্রাদার্স ট্যানারির কর্মচারী আব্দুল কালাম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমাদের এখানে চামড়া আসে কম। বেশির ভাগ চামড়া এখন সাভারে চলে যাচ্ছে। তিন দিনে তারা আড়াই হাজারের মতো কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছেন। গত বছর ছিল আরও বেশি।
যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া থেকে রতন প্রামাণিক ৪০টির মতো লবণযুক্ত চামড়া নিয়ে পোস্তায় এসেছেন। তিনি বলেন, তিনি শুধু ঈদের মৌসুমে চামড়ার ব্যবসা করেন। এবার ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০টির মতো চামড়া কিনেছেন ৫০০-৬০০ টাকা দরে। এসব চামড়া রাতে লবণ দিয়ে পরের দিন সেই চামড়া পোস্তায় আনেন। কিন্তু দাম বলছে না। ছোট-বড় গড়ে ৫০০ টাকা করে দিতে চায়, সবশেষ ৬০০ বলেছে। কিন্তু তিনি বলেন ৮০০ টাকা না হলে দেব না।
রতন বলেন, দেখলাম সরকার লবণযুক্ত ঢাকার চামড়া ১ হাজার ৩৫০ টাকা রেট দিয়েছে। তাহলে আমি যে লবণযুক্ত চামড়া এনেছি, সেটা ৬০০ টাকা হয় কীভাবে। সরকার আবার বলছে, সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে। আমি যে চামড়াগুলো এনেছি, সেগুলো কেনা, লবণ দেওয়া ও পরিবহন ভাড়া যোগ দিলে আমরা এক হাজার টাকার ওপরে বিক্রি করতে হবে, নইলে লোকসান হবে। এর কমে বিক্রি করলে ব্যবসা তো দূরের কথা, গাড়ি ভাড়ার টাকাই ওঠে না।
সিরাজ মিয়া নামে একজন ব্যবসায়ী চামড়া নিয়ে পোস্তায় ঘুরছেন। তিনি বলেন, ভাই বাজার ভালো না। সরকার বলে একটা, বাস্তবে আরেকটা। ৬০০ টাকার বেশি দাম বলে না। আর দুই ঘণ্টা গেলে বলবে এই চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। তখন আরও কমিয়ে দেবে দাম। এরা সিন্ডিকেট করে দাম দেয়। একজন ৬০০ টাকা বলেছে মানে এর উপরে আর কেউ দাম বলবে না! এখন ভাবছি কী করব। লোকসান দিয়ে তো আর ব্যবসা করা যায় না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, ঈদের তৃতীয় দিনও ঢাকা শহর ও এর আশপাশের কিছু পশু কোরবানি হয়। সে চামড়াটাও সোমবার দুপুর থেকে আসতে শুরু করেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া যত তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে আনবেন, তত ভালো। আমরা আগেও বলেছি, চামড়া কেনার সময় যেন ভেবে-চিন্তে কেনেন তারা। কেননা, চামড়ার মান বুঝে আমরা দাম দেব।
তিনি বলেন, ঈদের দিন, দিনের বেলায় যেসব চামড়া এসেছে, সেগুলো ভালো চামড়া। যে কারণে সেগুলোর দাম ১০০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। কিন্তু রাত ৯টার পর যে চামড়াগুলো আসে সেগুলোর টেম্পার চলে যায়। আড়তদাররা সেসব চামড়া নিতে চান না। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের তখন এভারেজে একটা দাম দিয়ে দেন আড়তদাররা। না হলে তো সেই চামড়াগুলো পচে যাবে। এ জন্য বলে চামড়ার দাম কমেছে। আসলে ভালোটার দাম ভালো আর মন্দটার দাম একটু কমই থাকে।
গত রোববার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন লালবাগের পোস্তা পরিদর্শন করে বলেছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া। নির্ধারিত দাম কার্যকরে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ দল। মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন চামড়া ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে। জাতীয় পর্যায়ে আমরা একটি কন্ট্রোলরুম করেছি। সেখানে ২৪ ঘণ্টা চামড়া ব্যবস্থাপনা মনিটরিং হচ্ছে।
তিনি বলেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি চামড়ার উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে যেটা লবণ দেওয়া চামড়া। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই সেটা বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ও মেইনস্ট্রিমের কিছু মিডিয়াও ভুল তথ্য প্রচার করছে। চামড়া পচে গিয়েছে এমন একটি তথ্য দেখলাম চিটাগাংয়ের রাঙ্গুনিয়ার। একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী ৬২০টির মতো চামড়া নিয়ে এসেছেন, তিনি চামড়াটি সংরক্ষণ উপযোগী করেননি। চামড়াটি আধাপচা হয়ে গেছে। অথচ বিষয়টি নিয়ে একটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এর কারণ অসাধু ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে চামড়ার বাজারে আবারও একটা ধস নামানোর পরিকল্পনা করছে।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখেই অভ্যন্তরীণ বাজারের কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া দামে কেনাবেচা হলে কোনো ধরনের লোকসানের আশঙ্কা থাকবে না। আর প্রতিবছর মৌসুমি ব্যবসায়ীদের লোকসানের মুখে ফেলে দেয় চামড়ার বাজারের সিন্ডিকেট। এ জন্য সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে কাঁচা চামড়া তিন মাসের জন্য সরাসরি রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নির্ধারিত দামের বাইরে যারা চামড়া কেনাবেচা করবে কিংবা যারা জাতীয় এই সম্পদ বিনষ্টে কাজ করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে দেশের সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) আগে-ভাগে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কাঁচা চামড়া তাড়াহুড়ো বিক্রি না করে কিছুদিন যাতে সংরক্ষণ করা যায় সে জন্য লবণের সরবরাহ বাড়ানো হয়। বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে প্রায় আরও ১ লাখ টন লবণ সারা দেশে দেওয়া হয়। কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ৩০ হাজার মেট্রিক টন লবণ সরবরাহ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি। এর মধ্যে কোরবানিযোগ্য ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়া ও ৫ হাজার ৫১২টি অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এ বছরও ২০ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি গবাদি পশু উদ্বৃত্ত থাকতে পারে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, বছরে বাংলাদেশে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এই চামড়ার ৬০ ভাগের বেশি সরবরাহ মেলে কোরবানির মৌসুমে। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া।
আপনার মতামত লিখুন :