বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ১১:৩৪ পিএম

কোনো নিরাপদ জায়গা নেই গাজায়

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ১১:৩৪ পিএম

কোনো নিরাপদ জায়গা নেই গাজায়

ছোট একটি জায়গা। তার মধ্যে ধারণ ক্ষমতার বেশি মানুষ জড়ো করা। এরপর অনেকেই ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয় অনেকেই। গতকাল বুধবার গাজায় ‘পদদলিত’ হয়ে ২০ জন নিহত হয়েছেন, জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত জিএইচএফ। ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি অবরুদ্ধ শহর গাজায় দখলদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ চলছেই। অব্যাহত হামলায় প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত নিহত ৫৮ হাজারের মধ্যে ১৭ হাজারই শিশু।

এ অবস্থায় গাজায় আর মানুষের বেঁচে থাকার ‘কোনো নিরাপদ জায়গা নেই’ বলে মনে করেন ইউনিসেফের মুখপাত্র রোজালিয়া বোলেন। তার মতে, ফিলিস্তিনি অঞ্চলটির শিশুরা প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সম্মুখীন হচ্ছে। আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোজালিয়া বোলেন গাজাকে ‘শিশুদের কবরস্থান’ এবং ‘প্রতিদিনের ট্র্যাজেডির একটি দৃশ্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বোলেন বলেন, কমপক্ষে ১৭ হাজার শিশু নিহত হয়েছে।

এগুলো সংখ্যা নয়, এরা ছেলে এবং মেয়ে। ছোট বাচ্চা এবং শিশু...। ফিলিস্তিনি হতাহতের সংখ্যা অবিশ্বাস্য বলে দাবি করা হয়েছে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে, বোলেন এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। অবরুদ্ধ গাজা ভূখ-ে চলমান ইসরায়েলি হামলার ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) জানিয়েছে, সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন শিশু এক বা উভয় পা হারাচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গাজার মোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ১০৫ বাসিন্দা যুদ্ধ-সম্পর্কিত আঘাতে নতুন করে পঙ্গুত্ববরণ করেছে।

এর মধ্যে রয়েছেন ৪০ হাজার ৫০০ জনের বেশি শিশু। এই শিশুরা কেউ হাত বা পা হারিয়েছে, কেউ স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বলেন, ‘এটি কেবল একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি হাজার হাজার শিশুর জীবনের স্থায়ী বেদনার প্রতিচ্ছবি। তাদের অনেকে এখন জীবনভর হুইলচেয়ার বা কৃত্রিম অঙ্গের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে’  তিনি আরও বলেন, এ ধরনের চরম ক্ষতির পরিণাম শুধু শারীরিক নয়, এর গভীর মানসিক প্রভাবও রয়েছে। বহু শিশু এখন তীব্র মানসিক ট্রমা, আতঙ্ক, এবং দীর্ঘমেয়াদি উদ্বেগে আক্রান্ত। জাতিসংঘ এ পরিস্থিতিকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নিদর্শন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা এবং পূর্ণ স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে। বিশ্ব সংস্থাটির মতে, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা এরই মধ্যে প্রায় সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। আহতদের চিকিৎসা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও কৃত্রিম অঙ্গ সংস্থাপন- সবকিছুই চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। খবর জিও নিউজটিভির।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, ‘এমন ভয়াবহ মাত্রার মানবিক বিপর্যয়ের পরও যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চুপ থাকে, তাহলে আমাদের নৈতিক অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।’ 

যুক্তরাষ্ট্রর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানেটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি ত্রাণ কেন্দ্রে গতকাল ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জিএইচএফ বলেছে, সশস্ত্র আন্দোলনকারীরা জনতাকে উসকে দেওয়ার পর তাদের ভিড়ের চাপে ঘটনাটি ঘটেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, গত ছয় সপ্তাহে গাজার ত্রাণ কেন্দ্রগুলো ও খাদ্যবাহী ত্রাণবহরের কাছে অন্তত ৮৭৫ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু নথিবদ্ধ করেছে তারা। এসব মৃত্যুর বেশির ভাগই ঘটেছে জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে। ইসরায়েল-সমর্থিত জিএইচএফ জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের তাদের একটি কেন্দ্রে ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে ১৯ জন ও একজন ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে জিএইচএফ বলেছে, ‘আমাদের বিশ্বাস করার নির্ভরযোগ্য কারণ রয়েছে যে জনতার মধ্যে মিশে থাকা সশস্ত্র ও হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিরতা উস্কে দিয়েছে।’ তবে এ ঘটনা বা জিএইচএফের বিবৃতির বিষয়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি, জানিয়েছে রয়টার্স। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ১৫ মাসে প্রায় ৮৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই ভয়াবহ মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। জরিপ অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার ২০০ জন সরাসরি সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আর আট হাজার ৫৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন অনাহারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি তথ্য নয়, বরং বাস্তব পরিস্থিতি ও জনগণের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই জরিপ পরিচালিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত আরও ৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন ত্রাণপ্রার্থীও রয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে,  জিএইচএফ-এর কার্যক্রম শুরুর পর থেকে গাজায় ত্রাণ আনতে গিয়ে অন্তত ৮৭৫ জন মারা গেছেন।

এ ছাড়া ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের ইউএনআরডব্লিউএ সতর্ক করে বলেছে, অবরুদ্ধ গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার বাড়ছেই। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে জানা গেছে, মঙ্গলবার গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত শাতি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে আল জাজিরাকে স্থানীয় মেডিকেল সূত্রগুলো জানিয়েছে। এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অন্তত দুইজন নারী নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!