বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০১:২৩ এএম

সৌরজগত

মহাকাশে মিলল অদ্ভুত ‘ খ্যাপাটে’ তারার খোঁজ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০১:২৩ এএম

মহাকাশে মিলল অদ্ভুত ‘ খ্যাপাটে’ তারার খোঁজ

মহাকাশে এমন এক তারার খোঁজ পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, বাংলায় যার জন্য সম্ভবত উপযুক্ত বিশেষণ হচ্ছে ‘খ্যাপাটে’ আর ‘অদ্ভুতুড়ে’।


‘চাইম জে১৬৩৪+৪৪’ নামের এ বস্তুটি এমনভাবে শক্তিশালী রেডিও সিগন্যাল বা সংকেত ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি বলে দাবি তাদের।
বস্তুটি ‘লং পিরিয়ড রেডিও ট্রানজিয়েন্টস’ বা এলপিটিএস নামের এক দলের অংশ, যেটিকে সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এসব মহাজাগতিক বস্তু রেডিও সংকেত পাঠায়, অন্যান্য তারার চেয়ে খুব ধীরে ঘোরে, এমনকি একবার ঘুরে আসতে কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত সময় নেয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন খুঁজে পাওয়া বস্তুটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও দ্রুত ঘুরছে, যা এটিকে সত্যিই অদ্ভুত করে তুলেছে। বিষয়টি খুবই বিস্ময়কর। কারণ, সাধারণভাবে মহাকাশের ঘূর্ণায়মান বস্তু যেমন বিভিন্ন নিউট্রন তারা বা হোয়াইট ডোয়ার্ফ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে তার গতি হারায়। তবে ‘চাইম জে১৬৩৪+৪৪’ ঠিক উল্টো আচরণ করছে। ধীরে ঘোরা থেকে আরও দ্রুত ঘোরায় রূপ নিচ্ছে এই তারা, যা পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের সঙ্গে মেলে না।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন ঘটনা আগে কখনো ‘লং পিরিয়ড রেডিও ট্রানজিয়েন্টস’ বা এলপিটিএস-এ বস্তুর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। ফলে তাদের জন্য একেবারে নতুন ও রহস্যময় ঘটনা এটি। এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন’-এর ‘গ্রিন ব্যাংক অবজারভেটরি’ একজন জ্যানস্কি ফেলো ফেংকিউ অ্যাডাম ডং।


এ রহস্যময় বস্তুকে বিশ্লেষণ করতে ‘গ্রিন ব্যাংক টেলিস্কোপ’, ‘ভেরি লার্জ অ্যারে’ ও কানাডার ‘চাইম রেডিও টেলিস্কোপ’-এর মতো বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী কয়েকটি রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছে ডং ও তার গবেষণা দলটি। বস্তুটির এক্স-রে সংকেত খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে নাসার ‘নিল গেহরেলস সুইফট অবজারভেটরি’।


‘চাইম জে১৬৩৪+৪৪’ বারবার রেডিও সংকেত পাঠালেও তা নিয়মিত বা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পাঠায় না। কখনো বস্তুটি থেকে রেডিও সংকেত প্রতি ১৪ মিনিট পর পর আসে আবার এটি ৭০ মিনিটের একটি ভিন্ন চক্রে চলে যায়Ñ অর্থাৎ দুটি ভিন্ন রকমের সময়চক্রে সংকেত পাঠায় এ বস্তু।


বিজ্ঞানীদের ধারণা, এ অদ্ভুত সংকেতের বিভিন্ন ধরন থেকে বোঝা যায়, মূল বস্তুর আশপাশে কিছু একটা ঘুরছে, হতে পারে আরেকটি তারা। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, ‘চাইম জে১৬৩৪+৪৪’ বস্তুটি ‘ক্লোজ বাইনারি সিস্টেম’ বা দুটি মহাজাগতিক বস্তুর ঘনিষ্ঠ জোড়া, যেগুলোর একে অপরকে ঘিরে ঘুরছে।
অদ্ভুত বস্তুটি এমন রেডিও তরঙ্গ ছড়িয়ে দেয়, যেগুলো ১০০ শতাংশ ‘সার্কুলারলি পোলারাইজড’ বা এসব রেডিও তরঙ্গ মহাকাশে ছড়াতে এরা একেবারে নিখুঁত সর্পিল আকৃতিতে ঘোরে। এ এক বিরল ঘটনা। কারণ, রেডিও তরঙ্গ ঘূর্ণায়মান বা এলোমেলো হলেও শতভাগ ঘূর্ণায়মান রেডিও তরঙ্গ এখন পর্যন্ত কোনো পরিচিত নিউট্রন তারা বা হোয়াইট ডোয়ার্ফে দেখা যায়নি।


অদ্ভুত এ রেডিও সংকেত থেকে ইঙ্গিত মেলে, ‘চাইম জে১৬৩৪+৪৪’ যেভাবে রেডিও তরঙ্গ তৈরি করছে, তা হয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের এক প্রক্রিয়া, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। গবেষক দলের ধারণা, দুটি তারা একে অপরের এত কাছে থেকে ঘুরছে যে, ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে এরা। ‘গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ’ বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ছাড়ার মাধ্যমে এমনটি ঘটতে পারে। ফলে এদের কক্ষপথ ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে ও এর প্রভাবেই মূল বস্তুটি ক্রমশ দ্রুত ঘুরতে শুরু করেছে।
এ বস্তুটি অন্যান্য ‘লং পিরিয়ড রেডিও ট্রানজিয়েন্টস’ বা এলপিটিএস-এর চেয়ে এত ভিন্নভাবে আচরণ করছে, ফলে এটিকে ‘ইউনিকর্ন’ বলে বর্ণনা করেছন গবেষক ডং।


বিজ্ঞানীদের ধারণা, মহাকাশে এ রকম আরও অনেক রহস্যময় বস্তু লুকিয়ে থাকতে পারে, যেগুলো এখনো আবিষ্কারের অপেক্ষায় রয়েছে। গবেষকরা বলছেন, তারা সম্পর্কে থাকা জ্ঞানের সীমা আরও দূরে ঠেলে দিয়েছে এ আবিষ্কার, যেটি ভবিষ্যতে মহাবিশ্বের আরও অনেক অজানা রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করতে পারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!