শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ১১:৫২ পিএম

এনসিপির ‘নয়া’ বন্দোবস্ত গড়বে ‘নতুন’ বাংলাদেশ

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ১১:৫২ পিএম

এনসিপির ‘নয়া’ বন্দোবস্ত গড়বে ‘নতুন’ বাংলাদেশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের হাতে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনীতির মাঠে সবচেয়ে আলোচিত এই দলটি।

সংস্কার আর পরিবর্তনের প্রত্যয় নিয়ে গড়ে ওঠা দলটিকে ঘিরে তাই গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষাও অনেক বেশি। দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণের লক্ষ্যেই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ঘোষণা দিয়েছে এনসিপি। দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নতুন বাংলাদেশের আপামর জনগণ যে স্বপ্ন দেখেছে তাদের আশা পূরণের উদ্দেশ্যই এই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।

যার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন, মানবাধিকার, ন্যায্যতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে এবং দেশের সব নাগরিকের মর্যাদা নিশ্চিত করবে। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, পুরোনো সিস্টেমে দেশ চলতে পারে না। নতুন সংবিধানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতির মাধ্যমে ১৯৪৭, ’৫২, ’৭১ সর্বোপরি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় দেশ চলবে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থান একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে, যেমনটা দিয়েছিল ১৯৭১ ও ’৯০। দেশের রাজনৈতিক পরিসরে যত বড় আন্দোলন হয়েছে তা অভিন্ন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেই হয়েছে। যার মূল বক্তব্যÑ বৃহত্তর রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোতে আমূল পরিবর্তন। যা ছিল নিষ্পেষণ ও নিপীড়নমূলক, গোষ্ঠীতন্ত্রকে প্রশ্রয় ও দুর্নীতিগ্রস্তের বিরুদ্ধে। ২০২৪ নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতাও এসব পশ্চাৎপদতা ও পুরোনো ধারণা থেকে বের হয়ে আসার দাবি জানায়। সেই প্রজ্ঞা নিয়ে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দ্বারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ প্রত্যাশা করে, এই দল এবং অভ্যুত্থানের অগ্রগামী নেতারা দক্ষতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে নতুন দেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, তাদের ব্যর্থতা ছাত্র ও যুবদের নিজেদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকেও এক অনিশ্চিত পথে ধাবিত করতে পারে। ইতোমধ্যে নতুন দলটি বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত হয়েছে। অর্থ, স্বার্থ, প্রভাব বিস্তারসহ নানা কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে যাতে আশাহত হয়েছেন অনেকে। প্রায় এক বছরে দেশে বেশকিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারা শুরু হলেও প্রত্যাশিত রাজনৈতিক পরিবর্তন অনেকাংশেই সম্ভব হয়নি। একই সাথে অনেক বিষয়ে জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার দরকার রয়েছে। এই ছাত্রদের সরকার ও বর্তমান ক্ষমতা কাঠামো থেকে প্রচ্ছন্নভাবে দূরেও থাকতে হবে, যাতে সরকারের ব্যর্থতা তাদের কলুষিত করতে না পারে।

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, দেশ পরিচালিত হবে নতুন বন্দোবস্তে। আমাদের এই নতুন বন্দোবস্তে পুরোনো সিস্টেমে, পুরোনো আইনে এই বাংলাদেশকে পরিচালিত হতে দেব না। আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র তৈরি করব। যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রে মানুষ মানবিক মর্যাদা পাবে। তিনি বলেন, একটি বিশেষ মহল পুরোনো সিস্টেমে দেশ চালানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমরা চাই, নতুন বন্দোবস্তের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে। পুরোনো সিস্টেমে বাংলাদেশ চলতে পারে না। নতুন সংবিধানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতির মাধ্যমে ১৯৪৭, ৫২, ৭১ সর্বোপরি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় দেশ চলবে। ’৭২-এর সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আকাক্সক্ষা বাদ দিয়ে মুজিববাদী সংবিধানে পরিণত করা হয়। ৫৪ বছর আমরা এ বৃত্তের মাঝে ছিলাম। এ সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। যে সংবিধানের জন্য আমাদের একটা গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে। যে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী জনতা বাংলাদেশের আগামীর নতুন সংবিধান নির্ধারণ করবে।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে স্বপ্ন নিয়ে তরুণ সমাজ রাজপথে নেমে এসেছিল, শহিদ ভাইয়েরা জীবন দিয়েছিল, সেই স্বপ্নের কথা, সেই আকাক্সক্ষার কথা বলতেই আমরা প্রতিটি জেলায় জেলায় যাচ্ছি। আমরা মনে করি, জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা। যে ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষকে নির্যাতন করেছে, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন করেছে, জনগণের অধিকার হরণ করেছে, সেই সরকারের বিরুদ্ধে তরুণ ও সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে এসে জুলাই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল, যে ফ্যাসিস্ট সরকার ও বাহিনী ১৬ বছরে মানুষকে নির্যাতন করেছে, অসংখ্য গণহত্যা করেছে, মানুষের টাকা লুট করেছে, সেই ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তার বাহিনীর বিচার করা। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবির পাশাপাশি দেশব্যাপী সংস্কারের দাবি নিয়ে, নতুন একটা সংবিধানের দাবি নিয়ে আমরা পথে নেমেছি। এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, দেশের বিশাল তরুণদের উদ্দেশ্যেই আমাদের এই জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠিত হয়েছে। আমরা তরুণদের ক্ষমতায়িত করে বাংলাদেশের সব শ্রেণির, সব বয়সের মানুষের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই। এখানে তরুণেরা দায়িত্ব গ্রহণ করতে এসেছে। যারা বয়োজ্যেষ্ঠ রয়েছেন, তারা আমাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করবেন। জাতীয় নাগরিক পার্টিকে পরামর্শ দেবেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি সাধারণ মানুষের অধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। মুজিববাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে, সেই সংগ্রাম চলবে। চলবে নতুন বন্দোবস্তের কাজ।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা যখন সংস্কার, বিচারের কথা বলছি, তখন অনেক দল শুধু নির্বাচনের কথা বলছে। এ দেশের হাসিনার সিস্টেম, সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন যদি থাকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। এ দেশে নতুন বন্দোবস্ত বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, সংস্কারের আলোচনা এখনো টেবিলে আছে। নতুন বন্দোবস্ত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের লক্ষ্য জনতার দুয়ারে আমরা পৌঁছে দিচ্ছি। তিনি বলেন, নতুন বন্দোবস্তে ভারতের সাথে বন্ধুত্ব হবে, দাদাগিরি চলবে না।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!