ওপার বাংলার অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। যে কোনো বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে পছন্দ করেন তিনি। এক দশক আগে স্বামী শিলাদিত্য সান্যালের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে তার। এরপর আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি তিনি। একাই কাটছে তার সময়। নাম লেখিয়েছেন রাজনীতিতে।
বিয়ের আগে শ্রীলেখা প্রেমে পড়েছিলেন ঢাকার চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের। দীর্ঘদিন চুটিয়ে চুপিসারে প্রেম করেছিলেন তারা। দুই দশক আগে ‘সিংহ পুরুষ’ নামের ঢাকার একটি সিনেমায় অভিনয় করতে এসে পরিচয় হয় ফেরদৌস ও শ্রীলেখার। শুটিংয়ে কাছাকাছি থেকে চেনাজানা, এক পর্যায়ে তাদের মন দেওয়া-নেওয়া হয়। চুটিয়ে চুপিসারে শুরু হয় তাদের প্রেম।
এরপর নব্বইয়ের দশকে কলকাতার বরেণ্য নির্মাতা বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছিল সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। এই সিনেমায় শ্রীলেখার অনুরোধে কাজের সুযোগ পান ফেরদৌস। এ কথা রূপালী বাংলাদেশকে জানিয়েছেন অভিনেত্রী নিজেই।
এই দুটি সিনেমার সুবাদে তাদের প্রেম অনেক দূর এগিয়ে যায়। শুটিংয়ের ফাঁকে পর্দার ফ্রেম ডিঙিয়ে তারা কাটান একান্ত সময়। মূলত ফেরদৌসের কাছাকাছি আসার জন্যই শ্রীলেখা সে সময় সিনেমাটিতে ঢাকার নায়ককে যুক্ত করেছিলেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন।
তবে ফেরদৌসের সঙ্গে প্রেমের খবর অস্বীকার করেছেন শ্রীলেখা। তিনি কলকাতা থেকে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার কোনো প্রেম ছিল না। সিংগ পুরুষ সিনেমায় দ্বিতীয় নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিল ফেরদৌস। শুটিংয়ে এসে চুপচাপ বসে থাকত। দেখে মায়ায় পরে যাই। কলকাতায় ফিরে এসে হঠাৎ বৃষ্টি সিনেমায় নেওয়ার জন্য ফেরদৌসের কথা বলেছিলাম। তবে ফেরদৌসকে ভালো লাগত।’
যোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একান্ত সময় কাটিয়েছি কেউ দেখেনি। আমাদের বয়স কাছাকাছি। শুটিংয়ে একসময় প্রচুর আড্ডা মারতাম। সবসময় শুটিং বাবা থাকতেন। তার চোখের আড়াল হওয়ার সুযোগ ছিল না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্ভরযোগ্য সূত্রটি রূপালী বাংলাদেশকে বলেছেন, ‘সিংগ পুরুষ ও হঠাৎ বৃষ্টি সিনেমা দুটি করতে গিয়েই তাদের প্রেমের শুরু। তবে তাদের প্রেম বেশি দিন টেকেনি। কারণ, ফেরদৌস কিছুদিন পর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে একের পর এক সিনেমা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম হয়। দীর্ঘ সময় তারা প্রেম করেন। একটা সময় শ্রীলেখা-ফেরদৌসের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তখন ফেরদৌসকে ভুলে সহকারী পরিচালকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শ্রীলেখা, যদিও তাদের বিয়েটা শেষ পর্যন্ত ভেঙে যায়।’
জানা গেছে, ঋতুপর্ণার কারণে ফেরদৌস-শ্রীলেখার প্রেম ভেঙেছিল, যদিও দুই বাংলার ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে জানে। কখনো তাদের প্রেমের বিষয় সামনে আসেনি। এমনকি শ্রীলেখার সঙ্গেও কখনো প্রেম নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি ফেরদৌস।
এদিকে, ২০২৩ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে এসে আক্ষেপ করে শ্রীলেখা বলেছিলেন, ‘ফেরদৌসকে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমাতে নেওয়ার জন্য পরিচালক বাসু চ্যাটার্জীকে আমিই সুপারিশ করেছিলাম। সেটা বোধ হয় ও (ফেরদৌস) কোথাও কোনো ইন্টারভিউতে বলেনি। আজ আমিই বলে দিলাম।’
প্রেমের কথা অস্বীকার করলেও শান্ত, নম্র স্বভাবের ফেরদৌসকে দেখে ভাল লেগেছিল শ্রীলেখার। অত্যন্ত ভদ্র, সুপুরুষ অভিনেতার সঙ্গে কাজের সুবাদে বন্ধুত্ব হয়েছিল অভিনেত্রীর।
শ্রীলেখার আরও দাবি, পরে আর তেমন যোগাযোগ ছিল না ফেরদৌসের সঙ্গে। কালেভদ্রে দেখা হলে কথা হত। এখন সেই যোগসূত্রও ছিন্ন। বলা দরকার, গণঅভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে চিত্রনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। মাঝে খবর রটেছিল, ফেরদৌস ভারতে দীর্ঘদিনের বন্ধু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর বাসায় আশ্রয় নিয়ে লুকিয়ে আছেন। এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই ঋতুপর্ণা জানান খবরটি সঠিক নয়। তিনি নায়কের খোঁজ জানেন না।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন