পাকিস্তানের কুর্রাম এলাকা কয়েক দশক ধরে সুন্নি-শিয়া সহিংসতায় বিধ্বস্ত। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে।
অস্থিতিশীল উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে গতকাল বন্দুকধারীরা একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ছয় জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পেশোয়ার থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুর্রাম জেলায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এখানে সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমির নওয়াজ খান বলেন, ‘আজ সকালে, সশস্ত্র ব্যক্তিরা পাড়া চামকানির সুন্নি সম্প্রদায়ের এক সদস্যের গাড়িকে লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, গাড়ির ভেতরে থাকা ছয় জন নিহত হয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুর্রামের আরেক কর্মকর্তা হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিয়া-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তান একটি সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। কিন্তু দেশটিতে শিয়ারা জনসংখ্যার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। দেশটির শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার এনজিও পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনার ‘তাৎক্ষণিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত’ করার আহ্বান জানিয়ে কুর্রামের পরিস্থিতিকে ‘মানবিক সংকট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের স্থানীয় সরকার ও উপজাতীয় নেতারা যুদ্ধরত সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে অসংখ্য যুদ্ধবিরতির কথা বলেছেন। কিন্তু কেউই সহিংসতা থামাতে পারেনি। জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সংঘাতের সূত্রপাত হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে, এ অঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ বহনকারী একটি কনভয়ের ওপর হামলায় ছয়জন নিহত হয়।
পাকিস্তানে পৃথক তিনটি সন্ত্রাসী হামলায় সেনাসদস্যসহ অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেলুচিস্তানের দুই কর্মকর্তা জানান, প্রদেশটির রাজধানী কোয়েটার একটি স্টেডিয়ামে বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির (বিএনপি) সমাবেশ চলছিল। এ সময় পার্কিং লটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ১৪ জন নিহত এবং অনেকে আহত হন। গুরুতর আহতদের মধ্যে অন্তত সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গেছে, বিএনপি প্রধান আখতার মেঙ্গাল সমাবেশে বক্তব্য শেষ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে তিনি নিরাপদে আছেন বলে নিশ্চিত করেন। এদিকে বেলুচিস্তানেই আরেকটি হামলায় আধাসামরিক বাহিনীর পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন। ইরান সীমান্তবর্তী একটি জেলায় বাড়িতে তৈরি বোমা বিস্ফোরণে তারা প্রাণ হারান। এখন পর্যন্ত এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।অন্যদিকে, খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নুতে একটি আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবারের ওই হামলায় ছয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন