কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে একটি ছোট্ট হোটেল আজ মানবিকতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের কাছে ‘পাগলা হোটেল’ নামে পরিচিত এ দোকানের মালিক রনজু মিয়া মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে গড়ে তুলেছেন ভালোবাসার আশ্রয়স্থল।
২০২৩ সাল থেকে প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিনি তার হোটেলে নিঃস্বার্থভাবে খাওয়াচ্ছেন এসব মানুষকে। রান্না থেকে শুরু করে পরিবেশন, সবকিছু তিনি নিজেই করেন। বাইরের দিক থেকে সাধারণ এক খাবারের দোকান হলেও ভেতরে লুকিয়ে আছে সহমর্মিতা ও মানবিকতার উজ্জ্বল আলো।
রনজু মিয়া জানান, ঢাকায় একটি হোটেলে চাকরির সময় তিনি দেখেছেন অনেক অসহায় মানুষ খাবারের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। সেখান থেকেই নিজের হোটেল হলে তাদের খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ‘আজ আমি অসহায় মানুষকে খাওয়াতে পারছি, এটাই আমার শান্তি। যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন যেন মানুষকে খাওয়াতে পারি, আমার জন্য দোয়া করবেন,’ বলেন তিনি।
তার এই উদ্যোগে মুগ্ধ স্থানীয়রা। বাসিন্দা আলমগীর কবির (৫৫) বলেন, ‘যেখানে সবাই শুধু নিজের স্বার্থের পেছনে ছুটছে, সেখানে রনজু মিয়ার এই উদ্যোগ আমাদের মনে মানবিকতার উজ্জ্বল আলো জ্বালিয়েছে। এটি শুধু খাবার নয়, সহানুভূতির প্রকৃত অর্থ শিখিয়েছে।’
হোটেলের নিয়মিত অতিথি আসাদুল ইসলাম (৫০) বলেন, ‘পাগলা হোটেলে শুধু খাবারই মেলে না, মানুষ অনুভব করে ভালোবাসা ও সহানুভূতির ছোঁয়া। রনজু মিয়ার এই উদ্যোগ সমাজের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতার দারুণ উদাহরণ।’
ছোট্ট একটি হোটেল হয়তো এলাকার সীমানার বাইরে খুব বড় খবর নয়। কিন্তু এখানে প্রতি শুক্রবার যে কজন মানুষ ক্ষুধা মেটান, তাদের কাছে এটি কেবল খাবার নয়, এটি মানবিকতার জয়গান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন