বারোমাসি টক কুল চাষ করে প্রথম বছরেই বাজিমাত করেছেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবক্স গ্রামের কৃষক আব্দুল মাজেদ। পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করলেও প্রথম বছরেই সফলতা পান তিনি।
মাজেদ জানান, মাত্র দেড় বিঘা জমিতে ১০৩টি বারোমাসি কুলের চারা রোপণ করেন তিনি। এই জাতের কুল বছরে তিনবার ফল দেয়। জমির ভাড়া বাদে তার খরচ হয়েছে ২০-৩০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে দুই দফায় কুল বিক্রি করেছেন তিনি। বর্তমানে কেজি প্রতি ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে কুল। এ মৌসুমে তিনি প্রায় ১২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন বলে জানান। সুস্বাদু, রসালো ও টসটসে এই অসময়ের কুল ইতোমধ্যেই ক্রেতাদের মন জয় করেছে। ফলে বাজারে চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি অনেক কৃষকও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বারোমাসি কুল চাষে। প্রতিদিনই অনেকেই মাজেদের বাগানে এসে চারার খোঁজ নিচ্ছেন। সাতক্ষীরার কুল ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমের বাইরে কুল বাজারে আসায় ক্রেতাদের আগ্রহ ব্যাপক। অন্যদিকে উদ্যোক্তারাও ভালো লাভের আশায় এগিয়ে আসছেন। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় প্রায় ৭০০ জন চাষি নিয়মিত কুল উৎপাদন করেন।
চলতি মৌসুমে ফল সুন্দরী, গোল্ডেন আপেল ও থাই আপেল জাতের কুল ৪৭০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৪ টন উৎপাদন হয়েছে, মোট উৎপাদন ৬ হাজার ৫৮০ টন। উৎপাদন খরচ ছিল ১ কোটি ২২ লাখ টাকা, আর বিক্রি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার কুল। এতে চাষিরা বিঘা প্রতি গড়ে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা লাভ করেছেন। তিনি আরও জানান, এবারে নতুনভাবে ব্রজবক্স গ্রামের আব্দুল মাজেদ বারোমাসি কুল লাগিয়েছেন এবং ভালো দামও পেয়েছেন। এই নতুন জাতটি কৃষি বিভাগ বিশেষ নজরদারিতে রেখেছে। অসময়ে কুল উৎপাদন সাতক্ষীরায় কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন