জয় দিয়ে আইসিসি নারী বিশ^কাপে দুরন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় বাংলাদেশের মেয়েরা। এই ম্যাচের শুরুতেই বোলিংয়ে বাজিমাত করেন মারুফা আক্তার। পাকিস্তানের ওমাইমা সোহেল ও সিদরা আমিনকে দারুণ দুটি ডেলিভারিতে বোল্ড করেন বাংলাদেশের এই পেসার। পাকিস্তান ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ভেতরে ঢোকানো ইনসুইং ডেলিভারিতে ওমাইমাকে বোল্ড করেন মারুফা। তার পরের বলটিও ছিল আরেকটি চমৎকার ইনসুইং ডেলিভারি। ছন্দে থাকা ব্যাটার সিদরা আমিন ব্যাটে খেলতে গিয়েও সুইংয়ের কারণে ঠিকমতো খেলতে পারেননি। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভেঙে দেয়।
মারুফার দুটি ডেলিভারিই অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে পড়ে ভেতরে ঢুকেছে। নতুন বলে মারুফর এমন নিয়ন্ত্রণ দেখে সবাই মুগ্ধ। পাকিস্তানের ইনিংসে প্রথম ওভারে পরপর দুটি দুর্দান্ত ডেলিভারি আলোচনায় নিয়ে এসেছে মারুফাকে। বাংলাদেশের এই পেসারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আইসিসি মারুফার এ দুটি ডেলিভারি নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। মালিঙ্গার ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লেখা হয়, ‘নিখাদ দক্ষতা। দারুণ নিয়ন্ত্রণ। এখন পর্যন্ত এই আসরের সেরা ডেলিভারি।’ মালিঙ্গার এই পোস্টে মন্তব্যের ঘরে জবাবও দিয়েছেন মারুফা। তিনি লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ কিংবদন্তি।’ আইসিসির পোস্ট করা সেই ভিডিওতে মারুফাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজ।
নারী বিশ^কাপে ধারাভাষ্য দেওয়া এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘প্রথমত ও অনেক সুইং পেয়েছে এবং সঠিক লেংথে বোলিংও করেছে। সুইং পাওয়া ভালো, তবে ঠিক লাইন-লেংথে বোলিং না করলে পুরস্কার পাওয়া যায় না। তবে মারুফা প্রাপ্য ফল পেয়েছে। পর-পর দুই বলে বড় ২টি উইকেট, ওর হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা ওর প্রথম ওয়ানডে বিশ^কাপ। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় আমি টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে ওর বোলিং দেখেছি। আমি তখনো ওর বোলিং দেখে মুগ্ধ হয়েছি। ওর গতি, যেভাবে বল ডেলিভার করে, রানআপ সবকিছুতে।’ অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ে দারুণ সাফল্য হওয়া মারুফা বলেন, ‘আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত।
এটাই আমার প্রথম আসর। দুই মাস ধরে প্রতিদিন, এমনকি ঘুমের মধ্যেও আমি এই মুহূর্ত কল্পনা করেছি। প্রথম ম্যাচে ভালো কিছু করতে চাইতাম। মনে হচ্ছে, আমি-ই ম্যাচ জেতালাম।’ মারুফার আগুনঝরা বোলিংয়ে ছন্দ মেলান অন্য বোলাররাও।
নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে কোনো সুযোগই দেননি তারা। এরপর ব্যাট হাতে নতুন মুখ রুবাইয়া হায়দার দেখালেন অসাধারণ ব্যাটিং স্কিল। অর্ধশতকের ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে দলকে সহজ জয়ে পৌঁছে দেন। তবে তার ইনিংসকেও ছাপিয়ে যায় মারুফার জাদুকরি সূচনা। দুই বলে দুই উইকেট নেওয়ার অনুভূতি কেমন? মারুফা বলেন, ‘মনে হয়েছে শুধু স্বপ্ন। সতীর্থরা আমাকে দারুণ সমর্থন দিয়েছে। আর বিশেষ ধন্যবাদ আমাদের টিম অ্যানালিস্টকে, খেলার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিলেন। মাঠে আমরা প্রচুর এনার্জি দেখিয়েছি, এই জয় থেকে অনেক ইতিবাচকতা নিয়ে সামনে এগোব।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন