বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০৪:৩২ এএম

কাঁচিতে শান দিয়েই চলে আমিরুলের সংসার

হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০৪:৩২ এএম

কাঁচিতে শান দিয়েই চলে  আমিরুলের সংসার

পুরোনো কাঁচি, বঁটি, চাকু কিংবা দা ধার দিয়ে (শান দিয়ে) ব্যবহার উপযোগী করে তোলাই পেশা আমিরুল ইসলামের। গ্রাম-বাংলার পরিচিত এই পেশার যন্ত্রটির নাম ‘শান মেশিন’। নিজ হাতে তৈরি করা সেই শান মেশিন কাঁধে নিয়ে গত ৩৫ বছর ধরে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে শান দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন ভূমিহীন ষাটোর্ধ্ব আমিরুল ইসলাম।

কখনো বাইসাইকেলে, আবার কখনো চার্জার অটোরিকশায় করে হাটে-বাজারে বেরিয়ে পড়েন তিনি জীবিকার তাগিদে। যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে তার পরিবারের ভরণপোষণ। শেষ বয়সে এসে আশ্রয় নিয়েছেন ছেলের কেনা জমিতে, যেখানে একপাশে ছোট্ট ঘরে বসবাস করেন তিনি। নেই মাথাগোঁজার উপযুক্ত ঘর, তবুও নিরুপায় হয়ে সেখানেই দিন কাটছে তার। আমিরুল ইসলাম কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের ভূল্লারহাট ডাঙ্গাপাড়া ৩নং ওয়ার্ডের মৃত ছমির উদ্দিন পাইকারের ছেলে। নিজের কোনো জমিজমা নেই তার।

সরেজমিন কালীগঞ্জের কাকিনা বাজারে দেখা যায়, শান মেশিনের চাকা ঘুরিয়ে কাঁচিতে শান দিচ্ছেন আমিরুল। মেশিনের পাথরের চাকাটি ঘূর্ণায়মান অবস্থায় চাকু, দা কিংবা কাঁচি স্পর্শ করলেই ঘর্ষণে ধার উঠে আসে। এতে স্ফুলিঙ্গ (আগুনের ফুলকি) ছিটকে আসে, যা শরীর ও চোখের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দুই পায়ে প্যাডেল ঘোরানোর কাজটি অত্যন্ত পরিশ্রমের হলেও জীবিকার প্রয়োজনে এখনো সেটিই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আমিরুল বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের সন্তান হিসেবে কখনো স্কুলে যাওয়া হয়নি। ছোটবেলা থেকেই পরের খেতে কামলা খেটে সংসার চালাতে হতো। বয়স যখন ২৫, তখন কাঠের ফ্রেমে তৈরি এক শান মেশিন দিয়ে এই কাজ শুরু করি। পরে পুরোনো এক বাইসাইকেলে মেশিনটি বসিয়ে ৩৫ বছর ধরে শান দিচ্ছি। এখন চার্জার অটোরিকশায় করে হাটে-বাজারে যাই। প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৩৫০ টাকা আয় হয়। এই আয় দিয়েই সংসার চলে।’

আমিরুলের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। দুই ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন, মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। তবুও নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য এখনো তাকে মাঠে-বাজারে ঘুরে কাজ করতে হয়। তিনি আরও বলেন. ‘আমি ভূমিহীন মানুষ। এই বয়সে এসে শান দেওয়ার কাজ আর ভালো লাগে না, কিন্তু অন্য কোনো কাজ জানি না। মরার আগ পর্যন্ত এই কাজই করতে হবে’।

কাকিনা বাজারের দর্জি মাস্টার দ্বীনবন্ধু রায় বলেন, ‘আমি ১০-১২ বছর ধরে এখানে কাজ করছি। আমিরুল প্রায়ই এসে কাঁচিতে শান দেন। প্রতি কাঁচিতে ২০-৩০ টাকা নেই। তিনি না থাকলে আমাদের বাজারে গিয়ে কাঁচি ধার করতে হতো, এতে সময় ও খরচ দুটোই বেশি পড়ত।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!