রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১১:২২ পিএম

মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত সৈয়দ  মনজুরুল ইসলাম 

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১১:২২ পিএম

মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত সৈয়দ  মনজুরুল ইসলাম 

রাজধানীর মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে তাকে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তার মরদেহ রাখা হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে। বৃষ্টির মধ্যেই সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, বিশিষ্টজনসহ সর্বস্তরের মানুষ তার কফিনে শ্রদ্ধা জানান। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। 

শ্রদ্ধা জানাতে এসে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মনজুর আমার ছাত্র ছিলেন ও পরে সহকর্মী হয়েছেন। ছাত্রজীবনেই অধ্যাপনা শুরু করেন। সেই সময় তিনি খুবই বিচক্ষণ ছিলেন। তার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। বাবার আদর্শ অনুসরণ করে তিনি আদর্শ শিক্ষক হয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি সাহিত্য, শিল্পকলার সমালোচনা, নন্দনতত্ত্ব বিষয়ে উঁচু স্তরের লেখক ছিলেন। তিনি কখনো বিষণœ ও হতাশ হতেন না। বিনয়ী মানুষ ছিলেন। তার প্রস্থানে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বোন সাহিদা সাত্তার বলেন, আমার ভাই যে কতটা জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন, গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে তার ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ও আজ (গতকাল) এখানে বৃষ্টির মধ্যেও এত মানুষের সমাগমে আমরা অভিভূত হয়েছি।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুলার রোডে পাশাপাশি বাড়িতে অনেক বছর থেকেছি। তিনি ছিলেন খুবই জনপ্রিয় শিক্ষক। সেই জনপ্রিয়তা কত ব্যাপক, তা আজ এই বৃষ্টি উপেক্ষা করে এত মানুষের সমাগম দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তিনি নির্লোভ ও বিনয়ী ছিলেন। তার নিজস্ব রাজনৈতিক বিশ্বাস ছিল। তিনি নতুন লেখকদের উৎসাহ দিতেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা দুজনেই সিলেটের মানুষ। আমরা পরিবেশ ইস্যুতে অনেক সময় একসঙ্গে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন গভীর প্রজ্ঞাবান ও নিঃস্বার্থ মানুষ। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্যে একজনকে তিনি হারালেন। ছাত্রসমাজও তাদের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজনকে হারালো। যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া দেখেন, সকলেই আসলে আশা করেছিলেন যে একটা মিরাকল কিছু ঘটবে এবং উনি আবার ফেরত আসবেন। কিন্তু চলে যাওয়ার দিনটা নির্ধারিত থাকেই। আর একবার ফেরত এলেও চলে যেতেই হয়। সম্মানজনকভাবে ওনাকে আমরা বিদায় দিতে পারছি।

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আনার পর সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জীবন ও কর্ম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমাদ খান বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে তাকে শ্রদ্ধা জানান। ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে গতকাল ভোরে দেশে ফিরেছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তিনিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী, শহিদুল আলমের নেতৃত্বে দৃক পিকচার লাইব্রেরি, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের পক্ষে মফিদুল হক, নাট্যজন ম হামিদ, ব্র্যাকের আসিফ সালেহ, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, বাংলা একাডেমির পক্ষে মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম প্রমুখ। 

শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে। পরে কালি ও কলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ, ছায়ানট, ব্র্যাক পরিবার, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, জাতীয় জাদুঘর, প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট, কপিরাইট অফিস, ইউ ল্যাবের উপাচার্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ জাসদ, আর্কাইভ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

তারও আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আনা হয়। সেখানে শ্রদ্ধা জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অপরাজেয় বাংলার সামনে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজিন আজিজ চৌধুরী, ইংরেজি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, সংগীত বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ৭৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এর আগে গত ৩ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যাওয়ার পথে তিনি গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানান, তার ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়। পরে সেখানে তার হৃদ্যন্ত্রে স্টেন্টিং করা (রিং পরানো) হয়।


 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!