বিএনপি এমন এক বাংলাদেশ গড়তে চায়, যেখানে প্রতিটি মেয়েশিশু স্বাধীনতা, সুযোগ ও নিরাপত্তা পাবে, ঠিক যেমনটা তাদের বাবা-মা চায়। গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে আসুন, আমরা প্রতিটি মেয়ের স্বপ্ন দেখার, শেখার, নেতৃত্ব দেওয়ার এবং মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকারকে উদযাপন করি। একজন কন্যাসন্তানের পিতা হিসেবে আমি জানি, মেয়েদের ক্ষমতায়ন শুধুই নীতির বিষয় নয়, বরং এটি একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের বাংলাদেশের স্বপ্ন এমন এক দেশ গড়া, যেখানে প্রতিটি মেয়ে সেই একই স্বাধীনতা, সুযোগ ও নিরাপত্তা পাবে, যা প্রতিটি অভিভাবক নিজের সন্তানের জন্য কামনা করেন’।
তারেক রহমান বলেন, ‘সুযোগ পেলে আমরা আরও অনেক কিছু করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা দেখেছি, কীভাবে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৈরি পোশাকশিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে একে কেবল একটি শিল্প থেকে আশার প্রতীকে পরিণত করেছিলেন। লাখ লাখ নারী আনুষ্ঠানিক কর্মজীবনে প্রবেশ করেছেন, অর্জন করেছেন আয়, মর্যাদা ও স্বাধীনতা। তার নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের নারী ও কন্যাশিশুদের জীবনের মানোন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মেয়েদের শিক্ষাকে একটি অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথাও স্মরণ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মেয়েদের জন্য শিক্ষা বিনা মূল্যে করা হয়, শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য ও শিক্ষার জন্য নগদ সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে লাখ লাখ মেয়ে স্কুলে যেতে পেরেছে, যা বদলে দিয়েছে পরিবারের ভাগ্য, গড়ে তুলেছে শক্তিশালী নারী সমাজ, সৃষ্টি করেছে এক ক্ষমতায়িত নারী প্রজন্ম। ফিমেল সেকেন্ডারি স্কুল অ্যাসিস্টেন্স প্রজেক্টের মাধ্যমে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাধ্যমিক শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা অর্জিত হয় এবং শিশুবিবাহের হার কমে আসে। এই প্রকল্পটি পরে বিশ্বব্যাপী মেয়েদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের সফল মডেল হিসেবে স্বীকৃত হয়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সুশাসন যখন কন্যাশিশুর মর্যাদাকে সম্মান করে এবং তাদের ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। বিএনপির ভবিষ্যৎ নীতিমালায় সেই সম্মান ও বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা থাকবে।’
তারেক রহমানের প্রস্তাবগুলো হলো নারী গৃহপ্রধানদের নামে ‘ফ্যামিলি কার্ড’, যাতে পরিবারগুলোর আসল স্তম্ভের হাতে সহায়তা ও প্রণোদনা পৌঁছে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ, ব্যাবসায়িক প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা। মেয়েদের জন্য শক্তিশালী একাডেমিক ও কারিগরি শিক্ষার সুযোগ। নীতিনির্ধারণে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। মর্যাদা ও স্বাধীনতার সুরক্ষা। পরিবার ও সামাজিক কল্যাণকে নীতির কেন্দ্রে রাখা।
তারেক রহমান বলেন, ‘দৃঢ় বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতির শক্তি নিয়ে আমরা এই অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রতিটি মেয়ে যে স্বপ্ন দেখে, তার সেই স্বপ্ন পূরণের পথে রাষ্ট্রকে আমরা তার সঙ্গী করব, প্রতিবন্ধক নয়।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন