শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রুবেল রহমান

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ১২:০৫ এএম

নির্বাচনি প্রচারে দুই দল আটঘাট বেঁধেই মাঠে নামছে বিএনপি

রুবেল রহমান

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ১২:০৫ এএম

নির্বাচনি প্রচারে দুই দল  আটঘাট বেঁধেই মাঠে  নামছে বিএনপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে। নির্বাচন নিয়ে জনমনে শংকা কাজ করলেও ভোট ও জোটের অংক মেলাতে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামছে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। নির্বাচন সামনে রেখে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে সিরিজ কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলটি। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময় অনুযায়ী, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে হাতে খুব বেশি সময় নেই। সে জন্য এখন থেকেই পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামতে চান তারা। অর্থাৎ দেশের জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে কর্মসূচিতে নামছে বিএনপি। যার অংশ হিসেবে শুরুতেই মাঠে নামবেন দলের নারী কর্মীরা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকে খুলনা বিভাগ দিয়ে শুরু হচ্ছে কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের বিপরীতে সত্য তথ্য তুলে ধরতে চায় দলটির নেতারা। বাড়াতে চায় সামাজিক মাধ্যমে তৎপরতা। এবারের নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক জোয়ার তৈরি করতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ তারও জবাব দিতে চায় দলটি।

এদিকে অন্তত ৪ মাস আগে থেকেই জামায়াতের পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নেমেছে তাদের নারী শাখা। দেরি হলেও এবার বিএনপি তাদের নারীদের কাজে লাগাতে চায়। কারণ ঘরের ভোট ব্যাংক কব্জা করতেই এই পরিকল্পনা। ভোটের ফল বদলে দিতে নারী ভোটাররা গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা রাখে যেকোনো নির্বাচনে। নারী ভোটারদের টার্গেট করে এ পথে আগেই নেমেছে জামায়াত। সেই পথে হাঁটতে চায় বিএনপিও।

বিএনপির নারী নেত্রী নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সচেতনতার জায়গা থেকে সাবেক সব নারী জনপ্রতিনিধি যেন মাঠপর্যায়ে কাজ করেÑ সে জন্য আমরা তাদের নিয়ে মতবিনিময় করব শিগগিরই। নির্বাচনি গণসংযোগে তারা বিএনপির আদর্শ, নারীদের প্রতি দলের ভূমিকা, আগামী দিনে নারীদের নিয়ে দলের ভাবনা, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করবে। এ জন্য বিভাগীয় পর্যায়ের জেলাগুলোকে ভাগ করে তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে জামায়াতসহ বিভিন্ন দল তাদের নির্বাচনি কর্মসূচি শুরু করেছে। সুতরাং আমরা তো বসে থাকতে পারি না। গত সাড়ে ১৫ বছরে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারিতে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এই বিভ্রান্তি দূর করতে তৃণমূলের মানুষের সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হবে।’

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাব, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আছে। খুব শিগগির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক এলাকায় আমাদের প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। সেখানে সবাইকে ডেকে কথা বলা হচ্ছে, দলের পক্ষে যাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সবাইকে তা মেনে তার পক্ষে কাজ করতে। সে জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে অনেক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থাকে, এখন সেগুলোই করা হচ্ছে। সারা দেশেই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আসন ভাগাভাগির হিসাব দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। আসন নিয়ে সরল অংক মিলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দলটি। এ ছাড়াও বিষয়টি নিয়ে মিত্র দলগুলোর মধ্যেও বাড়ছে অস্বস্তি। শরিকদের অভিযোগ, তাদের গ্রিন সিগনাল দেওয়া হলেও অনেক বিএনপি নেতা এমন নির্বাচনি এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন, যেখানে মিত্র দলের নেতারাও মাঠে আছেন। তারা বলছেন, বিএনপি তৃণমূল প্রার্থীদের লাগাম টানতে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তারা। উদ্ভূত জটিলতা এড়াতে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের কাছ থেকে তালিকা চাওয়ার পর ২১৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে বিএনপির কাছে।

বিএনপি সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি প্রার্থী তালিকা দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ১৩৮টি, ১২ দলীয় জোট ২১, ১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি ১৩, জাতীয় পার্টি-বিজেপি পাঁচটি, গণফোরাম ১৫, লেবার পার্টি ছয় ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ১০টি আসনে তাদের প্রার্থীর নাম দিয়েছে। তবে কৌশলের অংশ হিসাবে কোনো কোনো দল সরাসরি লন্ডনে দেখা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা দিয়েছে। মিত্রদের আসন ছাড় নিয়ে এখন চলছে দরকষাকষি ও আলোচনা। তবে বিএনপি এবার মিত্রদের সর্বোচ্চ ৪০টি আসন ছাড় দিতে পারে বলে রয়েছে গুঞ্জন। সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। যদিও বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র দলগুলোর জন্য ৩০-৫০ থেকে আসন ছাড়ার প্রস্তুতি রেখেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিকদের ৫৮ আসনে ছাড় দিয়েছিল বিএনপি। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীকে ২২ আসন ও অন্যদের ৩৬ আসন ছাড় দেয় দলটি।

যদিও বাস্তবতার নিরিখে ছোট ছোট দলের সাংগঠনিক শক্তি তুলনামূলক দুর্বল। তাদের ভরসা অনেকটাই বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের ওপর। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিধান অনুযায়ী, জোটের প্রার্থী হলেও নিজ দলের প্রতীকেই লড়তে হবে। এতে যেমন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের ভোটব্যাংক কাজে লাগানো যাচ্ছে না, তেমনি বিএনপি থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা স্বীকার করেছেন, মনোনয়ন না পেয়ে অনেক নেতা ক্ষুব্ধ হবেন। তাদের শান্ত করা সহজ হবে না। আবার তাদের জায়গায় জয়ের সম্ভাবনা কম এমন মিত্রদের আসন দেওয়ার ব্যাপারটি কঠিন হবে। তারা বলেন, ‘বিএনপি নেতারা মনোনয়ন চাইছেন। কিছু আসনে মিত্র দলের প্রার্থী থাকার পরও তারা প্রচার চালাচ্ছেন। তাই সময় থাকতে বিএনপির উচিত তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা।’ তবে জানা গেছে, সেই সুযোগে ফাঁদ পেতেছেনে বিএনপির নির্বাচনি মাঠের প্রধান প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। বিএনপি থেকে মনোনয়ন না দিলে জামায়াত তাদের মনোনয়ন দেবে। তাদের টার্গেট বিএনপি নেতার যেসব অনুসারি আছেন তাদের সঙ্গে জামায়াতের ভোট যোগ করলে যোগফল ভালো হওয়া কিংবা জয়ের বন্দরে পৌঁছতে বেশ সুবিধাই হবে। 

এদিকে মিত্রদের আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিত্রদের সঙ্গে নিয়েই নির্বাচন ও রাষ্ট্র গঠনের কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৬৪টি রাজনৈতিক দল বিগত স্বৈরাচারের সময় যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। আমাদের সঙ্গে রাজপথের আন্দোলনে যে দলগুলোকে পেয়েছি, আমরা চাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে। সবার মতামত নিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে চাই। কমবেশি সবাইকে নিয়ে রাষ্ট্র গঠন করতে চাই।’

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মিত্রদের কত আসন ছাড়বে, সেটা আলোচনা ও বিবেচনার বিষয়। আমরা এমন আসনেই শরিকদের প্রার্থী দেব, যেসব আসনে জয়লাভের বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচনায় সেই দিকটিই আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!