নওগাঁর রাণীনগরে ঘুস বাণিজ্য, অনিয়ম-দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন দুরুল হোদা নামে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব)। গুরুত্বর নানা অভিযোগ ওঠার পরও নায়েবের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা।
দুরুল হোদা উপজেলার মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। স্থানীয় সেবাপ্রতাশীরা বলেছেন, তার খুঁটির জোর কোথায়?
জানা যায়, গত আগস্ট মাসে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ঘুস বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ওই অফিসের প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিয়ন সোহাগকে ১৯ আগস্ট বদলি করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে নায়েব দুরুল হোদাকে বদলি বা তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এতে দুর্নীতি ও ঘুস বাণিজ্যে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন নায়েব দুরুল হোদা। স্থানীয়রা বলছেন, মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে যেন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া ও ঘুসের রাজ্য বানিয়েছেন দুরুল।
উপজেলার কাশিমপুর ও মিরাট দুটি ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিস ছিল একটি, সেটি কাশিমপুরে। ভূমিসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত এলাকা মিরাট ইউনিয়নের জন্য গত প্রায় ৯ মাস আগে মিরাট ইউনিয়নের হামিদপুর বাজার এলাকায় নতুন করে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস করা হয়। ওই ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) হিসেবে যোগদান করেন দুরুল হোদা। যোগদানের পর থেকেই তিনি নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুস বাণিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
অভিযোগ উঠেছে, খাজনার অনুমোদন, খাজনার চেক, খারিজের প্রতিবেদন-প্রস্তাব, হোল্ডিং এন্ট্রি, মিসকেসের প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন ও ভুক্তভোগীর জমির সব সমস্যা সমাধান করে দিতে দুই হাজার থেকে শুরু করে প্রায় লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুস নেন দুরুল হোদা। সেবাপ্রত্যাশীরা তাকে চাহিদা মতো ঘুস দিলেই মিলে কাজ, না দিলেই সেবাপ্রত্যাশীদের মাসের পর মাস হয়রানিতে পড়তে হয়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে, অফিসে দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলারও অভিযোগ। তার মদদে অফিসের স্টাফদের মতো দুজন দালাল থাকেন সব সময় অফিসে। দালালদের মধ্যস্থতায় সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকেও হাজার হাজার টাকা ঘুস হাতিয়ে নেন।
নানা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মিরাট উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুরুল হোদার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় পাওয়ার পর তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে বক্তব্য না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর আমরা প্রাথমিক অনুসন্ধান করেছি। অনুসন্ধানে দুরুল হোদার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিক প্রমাণিত হওয়ায় বিভাগীয় মামলা রুজু করার লক্ষ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন