বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম

চিকিৎসক-জনবল সংকটে ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম

চিকিৎসক-জনবল সংকটে  ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা

*** বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
*** দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে গাইনি, মেডিসিন, সার্জারি, চর্ম, চক্ষু ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পদ

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক, নার্স ও সহায়ক কর্মচারীর তীব্র সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। খাতায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও বাস্তবে চলছে ৩১ শয্যার হাসপাতালের মতো সীমিত পরিসরে চিকিৎসা কার্যক্রম।

জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও এখনো ৫০ শয্যার ভবন ও প্রয়োজনীয় জনবল পাওয়া যায়নি। ফলে হাসপাতালটি এখনো ৩১ শয্যার কাঠামো অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। জামালপুরের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তঘেষা পাহাড়, নদী ও চরবেষ্টিত এই বকশীগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন। জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই উপজেলার একমাত্র সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার ৭ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী শ্রীবরদী, রাজীবপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার রোগীরাও চিকিৎসা নিতে এখানে আসেন। প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও হাসপাতালে মাত্র তিনজন চিকিৎসক কর্মরত আছেন।

দীর্ঘদিন ধরে গাইনি, মেডিসিন, সার্জারি, চর্ম, চক্ষু ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে আল্ট্রাসনোগ্রাম, অপারেশন থিয়েটারসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবা কার্যত বন্ধ। বিশেষ করে গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় প্রতিদিন বহু নারী রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

সরজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ওয়ার্ড ও টয়লেটসহ পুরো হাসপাতালজুড়ে নোংরা পরিবেশ, অপরিষ্কার বারান্দা ও দুর্গন্ধে ভরা টয়লেট। পাঁচজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ থাকলেও সবগুলোই শূন্য রয়েছে।

রোগীরা জানান, ডাক্তার না থাকায় ২৪ ঘণ্টায় মাত্র একবার চিকিৎসক এসে রোগী দেখেন। জরুরি বিভাগে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তারা সীমিত চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী বলেন, ‘রোগ নির্ণয় করতে না পেরে নাপা, প্যারাসিটামল, ওমিপ্রাজল ইত্যাদি সাধারণ ওষুধ লিখে রোগীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ রোগীকেই জামালপুর, শেরপুর বা ময়মনসিংহে রেফার্ড করা হয়।’

রোগী তানিয়া জানান, ‘টিকিট কেটে দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু ডাক্তার আসেননি। অনেক রোগী অপেক্ষা করে ফিরে যাচ্ছেন।’ আরেকজন রোগী তানজিম আরা বলেন, ‘আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে এসে শুনলাম ডাক্তার নেই, বাইরে টাকা দিয়ে করতে হবে।’

সিনিয়র স্টাফ নার্স রোকিয়া আক্তার বলেন, ‘রোগীর চাপ অনেক, কিন্তু জনবল কম। অল্পসংখ্যক কর্মী দিয়ে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ইচ্ছা থাকলেও সীমাবদ্ধতার কারণে রোগীদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না।’

তিনি আরও জানান, ‘হাসপাতালে জেনারেটর, নিরাপত্তাকর্মী ও নাইট গার্ড নেই। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে আমরা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় থাকি, রোগীরাও ভয়ে থাকেন। সম্প্রতি তিনটি মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এই হাসপাতালে বকশীগঞ্জ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রতিদিন আউটডোর ও জরুরি বিভাগে কয়েকশ রোগীর ভিড় থাকে। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীর সেবা দেওয়া কষ্টকর হলেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!