টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস গতকাল বুধবারও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। টানা দরপতনের ফলে চার মাস পর প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে কমেছে সব কটি মূল্যসূচক।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। কিন্তু লেনদেনের সময় ১০ মিনিট পার হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৭টির। আর ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৫২টির দাম কমেছে এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৬২টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৫৪টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৮৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে গত ৮ জুলাইয়ের ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ হাজারের নিচে নামল।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৪০ পয়েন্টে নেমে গেছে। সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৫ কোটি ৪৯ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৫৩ কোটি ৫৭ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৩১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, মনোস্পুল পেপার, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২১টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন