বলিউডের ঝলমলে দুনিয়ার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক কঠিন বাস্তবতা। গ্ল্যামারের এই জগতে অনেক সময়ই দেখা যায় ক্ষমতার অপব্যবহার আর অস্বস্তিকর আচরণ। সেই কঠিন পথ পেরিয়েই বলিউডে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন কোচবিহারের মেয়ে মৌনী রায়।
টেলিভিশন জগৎ থেকে তার যাত্রা শুরু। কিন্তু খ্যাতির শিখরে পৌঁছানোর আগেও তাকে সম্মুখীন হতে হয়েছিল এক তিক্ত অভিজ্ঞতার। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মৌনী রায় তার অতীতের সেই খারাপ দিনটির কথা তুলে ধরেন। তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, এটিকে সরাসরি ‘কাস্টিং কাউচ’ বলা চলে না, কিন্তু এটি এমন এক ঘটনা যা তাকে দীর্ঘদিন মানসিক আঘাত দিয়েছিল।
সময়টা ছিল তার জীবনের একবারে শুরুর দিক। সবে ২১ কি ২২ বছর বয়স। মৌনী জানান, একদিন তিনি এক প্রযোজনা সংস্থার অফিসে গিয়েছিলেন। সেখানে সিনের বর্ণনা চলছিল। হঠাৎ এমন একটি দৃশ্য আসে যেখানে নায়িকা সুইমিং পুলে জ্ঞান হারায় এবং নায়ক তাকে তুলে এনে মাউথ-টু-মাউথ রেসপারেশন দেয়।
এরপর যা ঘটল, তা মৌনীর জন্য ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং মর্মান্তিক। কোনো রাখঢাক না করে সেই ব্যক্তিটি আক্ষরিক অর্থেই মৌনীকে ধরে, তার মুখের ওপর নিজের মুখ রেখে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়ার ভঙ্গি করে দৃশ্যটি দেখালেন।
মৌনী সেদিন যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পারেননি সেই মুহূর্তে তার সঙ্গে কী ঘটছে। তার কথায়, ‘আমি কাঁপতে শুরু করলাম এবং তৎক্ষণাৎ নিচে দৌড়ে এলাম।’ সেই দিনটির দুর্ব্যবহারের স্মৃতি তাকে সত্যিই দীর্ঘদিনের জন্য ক্ষতবিক্ষত করেছিল।
যে মৌনী রায় ‘কিঁউকি সাস ভি কভি বহু থি’ দিয়ে শুরু করে ‘দেব কি দেব মহাদেব’ এবং ‘নাগিন’-এর মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালের মাধ্যমে আকাশছোঁয়া খ্যাতি পেয়েছেন। ‘গোল্ড’ দিয়ে বলিউডে অভিষেক করেছেন এবং ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র মতো সিনেমাতে নিজের ছাপ রেখেছেনÑ তারও ক্যারিয়ারের শুরুতে এই ধরনের অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
আগামীতে ডেভিড ধাওয়ানের পরিচালনায় ‘হ্যায় জওয়ানি তো ইশক হোনা হ্যায়’-এর মতো রোমান্টিক কমেডিতে তাকে দেখা যাবে। কিন্তু ঝলমলে পর্দার বাইরে, মৌনী রায়ের এই স্বীকারোক্তি ইন্ডাস্ট্রির অলিখিত কঠিন দিকটিকে আবার একবার সামনে নিয়ে এলো।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন