‘সিন্ডিকেট করে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের’ অভিযোগে আরও পাঁচটি রিক্রুটিং এজেন্সির ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব মামলায় ৩১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা ‘আত্মসাৎ ও পাচারের’ অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এই ৫ এজেন্সি ১৮ হাজার ৭৬৭ জন কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে ‘পাঁচ গুণ বেশি অর্থ’ আদায় করেছে। এর আগে গত ১১ নভেম্বর ৪ রিক্রুটিং এজেন্সির পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। একই অভিযোগে গত ৬ নভেম্বর ৬ রিক্রুটিং এজেন্সির ১১ জনের বিরুদ্ধে ও ১৪ সেপ্টেম্বর ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির কর্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
যেসব এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে: ২,৮৩০ জন কর্মীর কাছ থেকে ৪৭ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা ‘অতিরিক্ত গ্রহণের’ অভিযোগে জিএমজি ট্রেডিং (প্রা.) লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করছে দুদক। ৩,২৩৯ জন কর্মীর কাছ থেকে ৫৪ কোটি ২৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা ‘অতিরিক্ত গ্রহণের’ অভিযোগে দি জিএমজি ট্রেডিং অ্যাসোশিয়েটের চেয়ারম্যান, পরিচালকসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা হচ্ছে। ৪,২৭৫ জন কর্মীর কাছ থেকে ৭১ কোটি ৬০ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা ‘অতিরিক্ত গ্রহণের’ অভিযোগে কিউকে কুইক এক্সপ্রেস লিমিটেডের এমডি, চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের নামে মামলা হচ্ছে। ৪,৫৬৬ জন কর্মীর কাছ থেকে ৭৬ কোটি ৪৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ‘অতিরিক্ত গ্রহণের’ অভিযোগে এমইএফ গ্লোবাল বাংলাদেশের এমডি, চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। আরও ৩,৮৫৭ জন কর্মীর কাছ থেকে ৬৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা ‘অতিরিক্ত গ্রহণের’ অভিযোগে এমইএফ গ্লোবাল বাংলাদেশের এমডি, চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের নামে মামলা হচ্ছে।
বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর আবার বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে দেশটি। সেই সময় শ্রমিক ভিসায় দেশটিতে যেতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করে সরকার। ২০২২ সালে এক অফিস আদেশে এ খরচ নির্ধারণ করেছিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়া সরকারের চুক্তির আওতায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১০টি নির্ধারিত রিক্রুটিং এজেন্সি দেশটিতে শ্রমিক পাঠাত। পরে ২০২১ সালে নতুন একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে দুই দেশ। এতে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০টি করা হয়। তবে তখন নতুন সিন্ডিকেট তৈরি হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ১০০ এজেন্সির মধ্যে ২০-২৫টি এজেন্সির ‘সিন্ডিকেটই’ নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন