সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০১:০৯ এএম

বাস শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে বরিশাল রণক্ষেত্র

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০১:০৯ এএম

বাস শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে  বরিশাল রণক্ষেত্র

*** শতাধিক পরিবহন ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
*** ক্ষয়ক্ষতি ৩ কোটি টাকার বেশি
*** নথুল্লাবাদ থেকে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ

সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া না নেওয়াকে কেন্দ্র করে বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। গত শনিবার সন্ধ্যারাতে বসচার ঘটনাকে ঘিরে বাস টার্মিনালে শিক্ষার্থী-শ্রমিক পাল্টাপাল্টি হামলা এবং শতাধিক পরিবহন ভাঙচুরে গোটা নগরীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুই ঘণ্টাব্যাপী চলমান সংঘাত নিয়ন্ত্রণে নিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ হিমশিম খেলে সেনাবাহিনী রাত ৯টার দিকে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করে। মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানাধীন এলাকায় শনিবার রাতের এ সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল রোববার বরিশাল থেকে বাস চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিএম কলেজের এক শিক্ষার্থী হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় তার সঙ্গে বাসের স্টাফদের কথা কাটাকাটি হয়। এ খবর পেয়ে ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী শনিবার সন্ধ্যার কিছুটা পরে নথুল্লাবাদে প্রবেশ করে এবং এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা থেকে বিষয়টি সংঘাতে রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা টার্মিনালের বাইরে এবং ভেতরে পার্কিং করে রাখা অন্তত শতাধিক বাস ভাঙচুর করাসহ অগ্নিসংযোগ করে। বরিশাল শহরের প্রবেশদ্বার নথুল্লাবাদে সন্ধ্যারাতে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে উভয় গ্রুপের অন্তত ৫০ জনের বেশি লোক আহত হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ গিয়ে উভয় গ্রুপকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পুলিশের নির্লিপ্ততার একপর্যায়ে সংঘাত আরও জোরালো রূপ ধারণ করে এবং বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ অব্যাহত থাকায় ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ছুটে যায়। এরপর পরিবেশ কিছুটা শান্ত হতে থাকে।

তবে বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা মালিক-শ্রমিকদের দিকেই আঙুল তুলেছে। তাদের দাবি, হাফ ভাড়া না নেওয়াকে কেন্দ্র এক শিক্ষার্থীকে বাসশ্রমিকেরা বেইজ্জতি করেন। বিষয়টি জানতে গেলে তাদের ওপর শ্রমিকনেতা শাহাদাত হোসেন লিটনের নেতৃত্বে হামলা করা হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়। তখন বাসশ্রমিকেরা পরিবহন ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে তার দায় শিক্ষার্থীদের মাথায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। শ্রমিকদের এই হামলায় তাদের অন্তত আট সহপাঠী শেবাচিমে চিকিৎসাধীন আছে।

অবশ্য শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাস মালিক সমিতি এবং শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশাররফ হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএম কলেজের ৩০-৪০ শিক্ষার্থী একযোগে টার্মিনালে প্রবেশ করে ত্রাস চালিয়েছে। শতাধিক বাস ভাঙচুর করাসহ বিভিন্ন কাউন্টারে তারা লুটপাট চালিয়েছে। এ সময় তাদের বাধা দিতে গিয়ে হামলায় ৩০ জনের বেশি শ্রমিক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এই হামলা ও ভাঙচুরে বাস মালিকদের ২-৩ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে দাবি করে মোশাররফ হোসেন বলেন, সবগুলো পরিবহন ভাঙচুর করায় রোববার থেকে যাত্রীসেবা বন্ধ হয়ে গেছে। বাসগুলো মেরামত করার আগে আর যাত্রী পরিবহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরিশাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষ বেশি মাত্রায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। যাত্রীসাধারণের এই ভোগান্তি লাঘবের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম।

এই পুলিশ কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে জানান, বিষয়টি মীমাংসা করতে বাস মালিক ও শ্রমিক নেতা এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আশা করা যায়, সোমবারের (আজ) মধ্যে পরিবেশ-পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক হবে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!