সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০২:২৮ এএম

৬ বিনিয়োগকারী সংস্থাকে একীভূত করার উদ্যোগ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০২:২৮ এএম

৬ বিনিয়োগকারী সংস্থাকে একীভূত করার উদ্যোগ

ব্যবসার পরিবেশ সহজ ও গতিশীল করতে বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট ছয় সংস্থাকে একীভূত করে কেন্দ্রীয় ‘ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সি (আইপিএ)’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইপিএ বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সল্যুশন সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এই একীভূতকরণ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। উদ্যোগটি ঘিরে বিভিন্ন মহলে পক্ষে-বিপক্ষে মত উঠেছে। কেউ এটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে মনে করছেন বিশেষ করে বেপজাকে এই কাঠামোর আওতায় আনা ঠিক হবে না। এ বিষয়ে চীনা বিনিয়োগকারীরাও আপত্তি জানিয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের মতে, একীভূতকরণ যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক, ব্যবসাসংশ্লিষ্ট সনদ প্রদান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।

২০১৬ সালে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনকে একীভূত করে গঠন করা হয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ ছিল, যদিও উদ্যোক্তারা এখনো নানা জটিলতা ও অভিযোগের কথা তুলে ধরছেন। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে ছয়টি সংস্থাকে একই ছাতার নিচে আনার উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছেÑ এটি কতটা বিনিয়োগবান্ধব হবে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক কাঠামোয় আনার নির্দেশ দেন। ছয় সংস্থার এ তালিকায় রয়েছেÑ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ), পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপিএ) এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

বিডার নির্বাহী সদস্য ও হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি জানান, আইপিএ গঠনের রোডম্যাপ প্রণয়নে চলতি মাসেই একটি আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সিঙ্গাপুরের তিনটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে, যা শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, সংস্থাগুলোর একীভূতকরণ কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে রোডম্যাপ দেবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। ফেব্রুয়ারির মধ্যে পুরো একীভূতকরণ শেষ না-ও হতে পারে, তবে এটিকে বাস্তবায়নযোগ্য অবস্থায় আনা হবে, যাতে নতুন সরকার সহজেই কাজটি এগিয়ে নিতে পারে। ব্যবসা সহজ করা ও বিনিয়োগকারীদের হয়রানি কমাতেই আইপিএ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে নাহিয়ান রহমান রচি আরও বলেন, পাঁচটি মূল নীতির ভিত্তিতেই নতুন সংস্থা গড়ে তোলা হবে। এতে কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীর চাকরি ঝুঁকিতে পড়বে না এবং কোনো সংস্থার চলমান বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হবে না।

শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য প্লট বরাদ্দ দেয় বেজা, বেপজা, বিসিক, হাইটেক পার্ক ও পিপিপি কর্তৃপক্ষ। ফলে বিনিয়োগকারীদের এসব সংস্থার সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করতে হয়। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রায়ই বিভ্রান্তিতে পড়েনÑ কোন সংস্থা থেকে প্লট নিলে কী সুবিধা মেলে, কোথায় কী ধরনের সুযোগ রয়েছে, তা পরিষ্কারভাবে জানতে গিয়ে তাদের বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। বিডা বলছে, বিনিয়োগসংক্রান্ত সংস্থাগুলো পৃথকভাবে কাজ করায় সামগ্রিক বিনিয়োগ কার্যক্রমে সমন্বয়ের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করতে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি বড় একীভূত সংস্থা। নতুন এ কাঠামো বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘ওয়ান-স্টপ সল্যুশন’ হিসেবে কাজ করবে।

জানা গেছে, একীভূতকরণ নিয়ে বেপজার কর্মকর্তাদের মধ্যে আপত্তি রয়েছে। যদিও সরকারকে বেপজার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে কি না, জানা যায়নি। তবে বেপজার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বেপজা শুধু রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ। বেপজা রপ্তানিকারকদের নির্বিঘেœ বিনিয়োগকারীদের সেবা দিচ্ছে। অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হলে বিনিয়োগকারীদের জন্য জটিলতা তৈরি হতে পারে। বেপজার অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি করতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেপজার এক কর্মকর্তা বলেন, একীভূত হওয়ার বিষয়ে চীনা বিনিয়োগকারীরা আপত্তি জানিয়েছেন। চীনা বিনিয়োগকারীরা বলছেন, একীভূত হওয়ার চেয়ে বরং কাস্টমস-বন্দরের সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় বেপজাকে অন্তর্ভুক্ত না করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ইপিজেড ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এবং শাশা ডেনিমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ। তিনি জানান, অন্যান্য বিনিয়োগ সংস্থার তুলনায় বেপজার অধীন ইপিজেডগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সফলভাবে কাজ করছে। ৪০-৪৫ বছরের অভিজ্ঞতায় তাদের নিয়মকানুনে জটিলতা কম, ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বেশি। তার মতে, বেপজার একটি দক্ষ ও প্রতিষ্ঠিত ইকোসিস্টেম আছে। তাই এটিকে অন্য সংস্থার সঙ্গে একীভূত করা যুক্তিযুক্ত হবে না। বরং যে সংস্থাগুলো কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না, শুধু সেগুলোকেই একীভূত করার কথা বিবেচনা করা উচিত।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!