স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে ভাগবাটোয়ারায় মিল না হওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সরকারি লাখ লাখ টাকা মূল্যের খড় পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছেন স্থানীয় গো খামারিরা। তবে বিএডিসি কর্তৃপক্ষের দাবি, জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য খড়গুলো পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
বিএডিসি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএডিসি) গবেষণার জন্য প্রায় ৩০০ একর জমিতে ধান চাষ করা হয়। এসব ধান কাটার পর বিপুল পরিমাণ খড় হতো। এসব খড় পরে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিলামে বিক্রি হয়। এ হিসেবে প্রতিবছর খড় বিক্রির ৭-১০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়।
কিন্তু এবার তা হয়নি। স্থানীয় প্রভাবশালী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মিল না হওয়ায় খড়গুলো পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই আয়টা ছিল খামারের নিয়মিত আয়ের একটি স্থায়ী উৎস। তবে এবার নিলাম না হওয়ায় মাঠের পর মাঠ ধরে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে খড়। তবে আশপাশের লোকজন জমির কিছু অংশের খড় লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন।
এসব নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে চান না বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কর্মচারীরা। তবে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বন্দ্ব ও কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে এসব খড় পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
বিএডিসির আশপাশের বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিবছর নিলাম হতো বা সমঝোতার মাধ্যমে এইসব খড় একর প্রতি ৮-১০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু এবার স্থানীয় প্রভাবশালীরা একেকজন ৪-৫ একর করে ফ্রি দাবি করেন। কেউ একর প্রতি ২-৩ হাজার টাকা দিতে চায়। ফলে কর্মকর্তারা নিজেদের ভাগবাটোয়ারা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। এ জন্য বিএডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মিটিং করে পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) টেবুনিয়ার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এস এম মাহবুব-অর-রশিদ বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে খড় পুড়িয়ে ছাই করা হবে, যা সার হিসেবে জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন