বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত জাতীয় স্বার্থবিরোধী লালদিয়া-পানগাঁও টার্মিনাল ইজারা চুক্তি বাতিল এবং নিউমুরিং ও পতেঙ্গা টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে রাজধানীর যমুনা অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ বাধা দেয়। মিছিলটি কাকরাইল মোড়ে এলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হন। ওই সব দাবির পক্ষে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, বাংলাদেশ জাসদ ও জাতীয় গণফ্রন্টের যৌথ উদ্যোগে এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ হয়।
সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে মিছিলটি কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে। এতে ১০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হন।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ নিষিদ্ধ। যারা কর্মসূচি দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় কথা হয়েছে। তারপরও তারা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে থামানোর চেষ্টা করে। এ সময় তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। এটাকে সেই অর্থে লাঠিপেটা বলা যাবে না। তাদের যমুনার দিকে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। এতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহুল আমিনসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে বিক্ষোভকারীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
এদিকে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। পাশাপাশি দলটি অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারীকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিপিবি এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায়। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি রতনকে রাজপথে ফেলে নির্মমভাবে পেটানো হয়। পুলিশের বর্বর নির্যাতনে সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা কাজী রুহুল আমিনের মাথা ফেটে যায়। এ সময় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। বিনা উসকানিতে সিপিবি সাধারণ সম্পাদককে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে পুলিশ যে বর্বরতা চালিয়েছে, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এ ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে হয়েছে।
সিপিবির বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরকার শেখ হাসিনার অনুসৃত পথে জাতীয় সম্পদ বহুজাতিক কোম্পানির হাতে হস্তান্তর করছে শুধু নয়, এসব অপকর্মের প্রতিবাদকারী সম্মুখযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে ফ্যাসিবাদী কায়দায় নিপীড়ন-নির্যাতন করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন