জাতীয় সড়ক না নদী, একঝলক দেখে বোঝা মুশকিল। সিকিম পাহাড়ে এক রাতের প্রবল বর্ষণে ফুঁসছে তিস্তা। কলকাতা আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উত্তরবঙ্গে অনেক জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি জেলায় বজ্রপাতসহ ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। আলিপুরদুয়ারে ভারি বৃষ্টিপাত হয়।
কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে নি¤œচাপ সরে গেলেও এ মুহূর্তে বৃষ্টি থেকে নিস্তার মেলেনি বঙ্গবাসীর। কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী রাজ্য সিকিমে গত সোমবার (২৮ জুলাই) লাগাতার প্রবল বৃষ্টির কারণে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে খরস্রোতা তিস্তা নদী। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে পানি। প্রবল বর্ষণের কারণে কালিম্পং ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে পাহাড়ি নদী তিস্তার পানি উঠে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সব যানবাহনের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সব গাড়ি লাভা হয়ে কালিম্পং এবং সিকিমের দিকে যাচ্ছে। তিস্তাবাজার এলাকায় পেশক রোডও ডুবেছে তিস্তার পানিতে। তিস্তা ব্রিজের কাছে কালিম্পং-দার্জিলিং সংযোগকারী রাস্তা পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা পাড়ে বসবাসকারীদের নদীর কাছাকাছি না যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে সিকিম ও দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের পাহাড়ি এলাকায় ধস নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদীর পানি বাড়ার ফলে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে ধস নামতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইতে শুরু করার কারণে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। খরস্রোতা নদী তিস্তার পাশাপাশি মহানন্দা, বালাসন নদীতেও পানি বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও পুরো বিষয়টির ওপর নজর রেখেছে প্রশাসন। পরিণতিতে নদী এবং ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক মিলেমিশে একাকার। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও আবার তার চেয়ে বেশি জল বইছে জাতীয় সড়ক দিয়ে। যার জেরে সোমবার রাত থেকেই যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়ার যা পূর্বাভাস, তাতে এদিনও ভারি বর্ষণের সতর্কতা রয়েছে।
এই সড়কে ফের কবে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে, তা অনিশ্চিত। দুর্যোগের জেরে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তাদের অনেক ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শিলিগুড়ি-সিকিম এবং কালিম্পং-শিলিগুড়ির মধ্যে সড়ক যোগাযোগ চালু রয়েছে লাভা-আলগাড়া-গরুবাথান রুটে। প্রশাসন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। পূর্বাভাস মেনে এদিন ফের ভারি বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা।
আপনার মতামত লিখুন :