জাপানে গত বছর জন্মের তুলনায় ৯ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা ১৯৬৮ সালে সরকারি জরিপ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বড় বার্ষিক জনসংখ্যা হ্রাসের রেকর্ড। নতুন সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটিতে জন্ম হয়েছে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬১ জন শিশুর। ১৮৯৯ সালে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর, যা সর্বনি¤œ সংখ্যা। একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ লাখ ৯৫ হাজার, অর্থাৎ প্রতিটি শিশুর জন্মের বিপরীতে দুজনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। ফলে জাপানের নাগরিক সংখ্যা এক বছরে কমেছে ৯ লাখ ৮ হাজার ৫৭৪ জন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এ পরিস্থিতিকে দেশের বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীর ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বিনা মূল্যে শিশু যতœ, নমনীয় কর্মঘণ্টা ও পরিবারবান্ধব নীতি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে জাপানি নারীদের নিম্ন জন্মহার পরিবর্তনে নেওয়া নানা উদ্যোগ তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে জাপানের মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ কোটি ৪৩ লাখ, যা আগের বছরের তুলনায় ০.৪৪ শতাংশ কম। এর মধ্যে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ বিশ্বে মোনাকোর পর সর্বোচ্চ। কর্মক্ষম বয়সি জনগোষ্ঠী (১৫ থেকে ৬৪ বছর) কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশে। তবে বিদেশি বাসিন্দার সংখ্যা বেড়ে রেকর্ড ৩৬ লাখে পৌঁছেছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ। সরকার ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করলেও অভিবাসন ইস্যু এখনো রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল। বছরের পর বছর জন্মহার বাড়াতে আবাসন ভর্তুকি থেকে শুরু করে বেতনসহ পিতৃত্ব-মাতৃত্ব ছুটি বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েছে জাপান। কিন্তু উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়, স্থবির মজুরি ও কঠোর কর্মসংস্কৃতি অনেক তরুণকে পরিবার শুরু করতে নিরুৎসাহিত করছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ১৯৭০-এর দশক থেকেই জাপানের প্রজনন হার নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে, তাই এখন বড় ধরনের উন্নতি হলেও জনসংখ্যার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে কয়েক দশক সময় লাগবে।