ঢাকা শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

তাড়াইলে অর্জিত হয়নি পাটের লক্ষ্যমাত্রা

তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০২:২২ এএম

শস্যভান্ডারখ্যাত কিশোরগঞ্জের তাড়াইল চলতি মৌসেমে বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষান-কৃষানিরা।

তবে মৌসুমে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কৃষি বিভাগ বলছে, মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টির অভাবে পাটের আবাদ কম হয়েছে। সেই সঙ্গে মানও ভালো হয়নি। আর চাষিরা বলছেন, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় গুণগত মানও নষ্ট হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে তাড়াইল উপজেলায় ৮১৯ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৭০৪ হেক্টর জমিতে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা পাট জাগ দিতে ও আঁশ শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাট নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা থাকলেও মুখে নেই হাসি। তারা বলছেন, মৌসুমের শুরুতেই পানির অভাবে চাষ ব্যাহত হয়েছে। আবার পাট কেটে জাগ দেওয়ার সময়ও খাল-বিলে ও পুকুরে পর্যাপ্ত পানি না পাটের মান খারাপ হয়েছে।

গত বুধবার দুপুরে উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের ইছাপশর গ্রামে দেখা যায় কৃষক ইদ্রিস মিয়া জাগ দেওয়ার পাট কয়েকজন শ্রমিকসহ নিজে আঁশ ছড়ানো কাজ করছেন। তিনি জানান, এ বছর পাট চাষে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তবে পাটকাঠি বিক্রি করে কিছুটা হলেও লাভবান হওয়ার আশা করছেন।

তাড়াইল সদর বাজারের পাট ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ পাল বলেন, আঁশের মান ও রঙের ওপর দাম নির্ভর করে। আঁশের মান যত সোনালি ও মোটা হবে দাম তত বেশি হবে। সবচেয়ে ভালোমানের পাট মণপ্রতি ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের পাট ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে হয়েছে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আজিজুর রহমান নামের এক চাষি বলেন, এবার মৌসুমের শুরু থেকেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় আঁশ মানসম্মত হয়নি। এ কারণে সোনালি আঁশের দাম নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তা ছাড়া, বর্তমানে শ্রমিকের মজুরি বেশি হয়েছে। ফলে এ বছর লাভের বদলে লোকসানের পরিমাণ বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিকাশ রায় বলেন, চলতি মৌসুমে তাড়াইল উপজেলায় ৮১৯ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৭০৪ হেক্টর জমিতে। কারণ মৌসুমের শুরু থেকেই এ এলাকায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। ফলে পাট চাষ করতে গিয়ে চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। আবার পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষিরা। এতে পাটের গুণগত মানও নষ্ট হচ্ছে। এ হিসাবে পাটের উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে। ফলে লাভের অঙ্কও কিছুটা কমেছে।