পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি ক্লিয়ারেন্স অভিযান চলাকালে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে পাঁচজন সেনা নিহত হয়েছেন। একই অভিযানে ‘ভারত-সমর্থিত’ পাঁচ সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছে বলে সামা টিভির খবরে বলা হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কেচ জেলার শেরবান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) নিশ্চিত করেছে। আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, শেরবান্দি এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা উচ্ছেদের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী একটি অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর গাড়ি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, যার ফলে পাঁচজন সেনা নিহত হন।
নিহত সেনারা হলেনÑ ক্যাপ্টেন ওয়াকার আহমদ (লোরালাই), নায়েক আসমাতুল্লাহ (ডেরা গাজী খান), ল্যান্স নায়েক জুনায়েদ আহমদ (সুক্কুর), ল্যান্স নায়েক খান মোহাম্মদ (মারদান) এবং সিপাহি মোহাম্মদ জাহুর (সোয়াবি)। আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানের সাহসী অফিসার ও সেনাদের এই আত্মত্যাগ দেশ থেকে সন্ত্রাস নির্মূলের দৃঢ় সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভারত-পৃষ্ঠপোষক সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে নিরাপত্তা বাহিনী জাতির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গত এক সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখোয়ার বিভিন্ন সামরিক অভিযানে অন্তত ১৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়ার লালকিল্লা মাইদান এলাকায় ‘ভারত সমর্থিত সন্ত্রাসী’দের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাতজন সেনা সদস্য নিহত হন। নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালাচ্ছিল। এদিকে আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে দুটি পৃথক অভিযানে ৩১ জন স্থানীয় পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ওই অঞ্চলটিতে সম্প্রতি গোষ্ঠীটির উপস্থিতি বেড়েছে। এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন শনিবার পার্শ্ববর্তী জেলায় এক হামলায় ১২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
টিটিপি ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। সেনাবাহিনী সোমবার রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা সপ্তাহান্তে ৩১ জন ‘খারিজি’কে হত্যা করেছে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি টিটিপি যোদ্ধাদের বোঝাতে এই শব্দটি ব্যবহার করছে। বিবৃতিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীটিকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশ দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করে অস্থিতিশীল করার অভিযোগ করে আসছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো জঙ্গিকে নির্মূল করতে স্যানিটাইজেশন অভিযান চলছে।’ ২০২১ সালে আফগান তালেবান কাবুলে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি তৎপরতা বেড়েছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন, গত দুই মাসে টিটিপির উপস্থিতি আরও বেড়েছে।