ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

নিম্নকক্ষেও পাস পাকিস্তান সংবিধানের বিতর্কিত সংশোধনী, ইমরান খানের দলের বর্জন

ভিনদেশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০১:৪৬ এএম

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট দেশটির সংবিধানের ২৭তম সংশোধনী পাস করেছে। এই বিতর্কিত সংশোধনী দেশটির সেনাপ্রধানের ক্ষমতা আরও বাড়াবে এবং তাকে আজীবন আইনি দায়মুক্তি দেবে। একই সঙ্গে এটি সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীনতাও সীমিত করবে। সমালোচকেরা একে ‘গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক’ বলে বর্ণনা করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি তথা জাতীয় পরিষদে বিলটি পাস হয়েছে। পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরÑযিনি দেশটির ডি-ফ্যাক্টো শাসক হিসেবে পরিচিতÑএই ২৭তম সংশোধনীর প্রধান উপকারভোগী। বিলটি এখন সামান্য পরিবর্তনের জন্য সিনেটে ফেরত পাঠানো হবে। এর আগে উচ্চকক্ষ সিনেট গত সোমবার এটি অনুমোদন করে। এরপর প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এতে স্বাক্ষর করলে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধানের অংশ হয়ে যাবে। এই সংশোধনীর অধীনে এ বছর শুরুর দিকে পাঁচ তারকাবিশিষ্ট জেনারেল হিসেবে মনোনীত হওয়া সেনাপ্রধান আসিম মুনির অভূতপূর্ব ক্ষমতা অর্জন করবেন। তাকে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস নামে নতুন একটি পদে উন্নীত করা হবে। এর ফলে তিনি শুধু সেনাবাহিনীই নয়, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীরও প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি তাঁকে আজীবন ফৌজদারি বিচারের হাত থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডজাংকট অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং ‘সেনাবাহিনী ও গণতন্ত্র: পাকিস্তানে সামরিক রাজনীতি’Ñ বইয়ের লেখক আকিল শাহ বলেছেন, মুনির ‘সাংবিধানিকভাবে অভূতপূর্ব এক সুরক্ষিত পদ সৃষ্টির মাধ্যমে নিজে ও ভবিষ্যতের সেনাপ্রধানদের ক্ষমতায় স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’ তিনি বলেন, সংশোধনীতে দেওয়া দায়মুক্তি ‘নাগরিক কর্তৃত্বের নীতিকে উপহাসে পরিণত করেছে, কারণ এটি তাকে সব ধরনের জবাবদিহির ঊর্ধ্বে স্থাপন করেছে।’ এই সংশোধনী সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যপরিধিও ব্যাপকভাবে খর্ব করেছে। পাকিস্তান রাষ্ট্রে এই প্রতিষ্ঠানটিই এত দিন নির্বাহী ক্ষমতার একমাত্র নিয়ামক হিসেবে টিকে ছিল। সংশোধনী অনুযায়ীÑসুপ্রিম কোর্টের ঊর্ধ্বে একটি নতুন ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠন করা হবে, যার বিচারপতিদের মনোনয়ন দেবে নির্বাহী বিভাগ। সমালোচকেরা বলছেন, এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অবশিষ্ট প্রতীকটিও ভেঙে পড়বে।