ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

ভারতে গাড়ি বিস্ফোরণ

প্রতিশোধে ছক কষছিল সন্ত্রাসীরা!

ভিনদেশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০১:৪৮ এএম

লাল কেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা বলে নিশ্চিত করল ভারত। ডিএনএ টেস্টের পর হামলায় ব্যবহৃত গাড়িতে প্রধান সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী উমর উন নবী ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকেরা। এদিকে তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত বাবরি মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতেই ছক কষছিল সন্ত্রাসীরা। এ লক্ষ্যে ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর ছয়টি স্থানে ছয় ধাপে হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আর সে জন্য ৩২টি গাড়িতে করে বিস্ফোরক পরিবহন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সন্ত্রাসীরা। বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার প্রতিশোধ হিসেবে আগামী ৬ ডিসেম্বর দিল্লির ছয়টি স্থানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল দিল্লির লাল কেল্লায় হামলা চালানো সন্দেহভাজন হামলাকারীদের। ১৯৯২ সালের এই দিনেই ভেঙে ফেলা হয় ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদ। পুলিশ বলছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীরা পাকিস্তানের নিষিদ্ধ গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদ এবং আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামপন্থি দল গাজওয়াত উল হিন্দের সঙ্গে মিলে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। মোট পাঁচ ধাপে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নীলনকশা তৈরি করেছিল তারা। এদিকে প্রথমবারের মতো বিস্ফোরণের ঘটনাটি সন্ত্রাসী কর্মকা- বলে নিশ্চিত করেছে ভারত সরকার। শ্রীনগরে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদের পোস্টার লাগানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হয় আরেক ডাক্তার আদিল রাঠোরকে। একের পর এক সঙ্গীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণ ঘটান উমর। বিস্ফোরণের সঙ্গে শাকিল ও রাঠোর উভয়েরই যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনা ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলেই অবশেষে নিশ্চিত করল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঘটনাটি সন্ত্রাসবাদী বলে গণ্য হয়েছে। আর এর পরই সোমবারের ওই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করল নয়াদিল্লি।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এর যোগ্য জবাব দেবে ভারত। জরুরি ভিত্তিতে এবং কঠোর পেশাদারির সঙ্গে বিষয়টি মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তদন্ত সংস্থাগুলোকে। বৈঠকে বলা হয়, দিল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনা আদতে ভারতের শান্তি এবং একতার ওপর আঘাত। এই হামলার নেপথ্যে যে যে স্তরে যারা যারা জড়িত, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে। ফের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। তদন্তকারীরা বলছেন, বিস্ফোরণের ঘটনা এবং এর আগে কাশ্মীরে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ সাতজন গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে একটি হুন্দাই আই২০ গাড়ি বিস্ফোরণে অন্তত আটজন নিহত এবং ২০ জনের বেশি আহত হন। ২০১১ সালের পর এটাই ছিল শহরটিতে প্রথম বড় ধরনের বিস্ফোরণ। এই ঘটনার নেপথ্যে যে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র রয়েছে, আগেই তা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

বুধবার একে সরাসরিই সন্ত্রাসবাদী ঘটনা বলে দেওয়া হলো। এদিন মন্ত্রিসভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘দেশ নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলো গাড়ি বিস্ফোরণের মাধ্যমে এটি ঘটিয়েছে।’ ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ঘটনাটি সন্ত্রাসবিরোধী কঠোর আইনের আওতায় তদন্ত করা হচ্ছে। হুন্দাই আই২০ গাড়িটি বিস্ফোরণের আগে কোথায় কোথায় ঘুরেছিল, তা গোয়েন্দাদের নজরে এসেছে। তদন্তে উঠে এসেছে দিল্লির দুই ব্যস্ততম জায়গার নামÑ কনট প্লেস এবং ময়ূর বিহার। লাল কেল্লায় আসার আগে ওই গাড়িকে দেখা যায় রাজধানীর ওই দুই জনবহুল এবং ব্যস্ততম এলাকায়। দিল্লিতে পৌঁছানার আগে ওই গাড়িটি হরিয়ানাতেই ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।