বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০২:৪২ এএম

গাজা নিয়ে মার্কিন প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত

ফিলিস্তিনের সমর্থন হামাসের প্রত্যাখ্যান

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০২:৪২ এএম

ফিলিস্তিনের সমর্থন হামাসের প্রত্যাখ্যান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার পক্ষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন। একই সঙ্গে পরিকলপনার দ্রুত বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রামাল্লাহ থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে। গাজা ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বিবৃতি পোস্ট করে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, এই প্রস্তাবের দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি।’ ফিলিস্তিনের গাজা ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের ১৩টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

তবে গাজার শাসকদল হামাস এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সংকট সমাধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এই পরিকল্পনায় গাজার জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, একাধিক দেশ এই বাহিনীতে সদস্য পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করেনি। নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়াসহ ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। কোনো দেশ বিরোধিতা করেনি। তবে রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে। অবশ্য হামাস এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, এটি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের দাবি পূরণ করে না। ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা পুনর্গঠন ও বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর পুনর্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

স্থানীয় সময় রোববার নিরাপত্তা পরিষদের সভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটি উত্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ। এতে বলা হয়, গাজায় শান্তি ফেরাতে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠিত হবে। একাধিক দেশ এরই মধ্যে বাহিনীটিতে সেনা পাঠাতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রস্তাব অনুযায়ী, আইএসএফ সদস্যরা ইসরায়েল ও মিসরের পাশাপাশি নতুনভাবে প্রশিক্ষিত ও হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে। এ ছাড়া তারা সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হামাসসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে স্থায়ীভাবে নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবে। এখন পর্যন্ত, ফিলিস্তিনের পুলিশ বাহিনী হামাসের অধীনেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং সোমালিয়াসহ ১৩টি দেশ। কোনো দেশ এর বিপক্ষে ভোট না দিলেও রাশিয়া ও চীন ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র বলেন, “প্রস্তাবটি জাতিসংঘে ইতিবাচকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া ‘ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করার প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’।” অবশ্য হামাসের শীর্ষ নেতারা এরই মধ্যে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের দাবি, আইএসএফ গঠনের প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও দাবি পূরণের পথে অন্যতম বাধা। প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত হওয়ার পর টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, এই পরিকল্পনা ‘গাজা উপত্যকায় জোরপূর্বক একটি আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া’, যা ফিলিস্তিনি জনগণ ও গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত কাজ করে যাওয়া বিভিন্ন গোষ্ঠী প্রত্যাখ্যান করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজার ভেতরে আন্তর্জাতিক বাহিনীর ভূমিকার মধ্যে হামাসের মতো প্রতিরোধ বাহিনীকে নিরস্ত্রীকরণ রাখা হয়েছে, যা নতুন বাহিনীর নিরপেক্ষতা নষ্ট করে এবং ইসরায়েলি দখলদারদের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাঁড়ায়। তবে মাইক ওয়াল্টজ জাতিসংঘকে বলেন, ‘আইএসএফ-এর কাজ হবে অঞ্চলটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গাজাকে সামরিকবাহিনী মুক্ত করা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা, অনুমোদিত বাহিনী ছাড়া বাকি সব অস্ত্র অপসারণ এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’ এই বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক সংস্থা বা বোর্ড অব পিস (বিওপি) গঠনেরও অনুমোদন দিয়েছে। বিওপির কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে ফিলিস্তিনি প্রযুক্তিবিদ-নির্ভর, অরাজনৈতিক কমিটি কাজ করবে যারা গাজা পুনর্গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করবে।

জাতিসংঘ জানায়, গাজা পুনর্গঠনের অর্থায়ন বিশ্বব্যাংকের সমর্থিত একটি ট্রাস্ট ফান্ড থেকে দেওয়া হবে। যার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে আইএসএফ ও বিওপি। এদিকে নিরাপত্তা পরিষদে গাজা পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় সদস্য দেশগুলোর অনাপত্তির ভোটকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, এই ভোট বিওপিকে ‘স্বীকৃতি ও অনুমোদন’ দেওয়ার একটি গ্রহণযোগ্য উপায়। সংস্থাটির চূড়ান্ত সদস্য তালিকা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলেও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই এই সংস্থার নেতৃত্ব দেবেন। ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘এটি জাতিসংঘের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে সারা বিশ্বে আরও শান্তি বয়ে আনবে; এটি সত্যিকার অর্থেই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত!’ যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এবং মিসর, সৌদি আরব ও তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ দ্রুত প্রস্তাব বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। পিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রস্তাবে উল্লেখিত শর্তগুলো ‘জরুরি ও অবিলম্বে’ বাস্তবায়ন করতে হবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রও জোর দিয়ে বলেন, “প্রস্তাবটি ‘অত্যন্ত জরুরি এবং বাস্তবধর্মী উপায়ে’ বাস্তবায়িত হওয়া দরকার। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান অর্জনের জন্য একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়’ নতুন ও নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে গাজার শাসনভার তুলে দিতে হবে।’

অন্যদিকে রাশিয়া ও চীন প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকার পেছনে পিএ এবং আটটি আরব-ইসলামিক দেশের সমর্থনকে উল্লেখ করেছে। এসব দেশের সঙ্গে চীনের শক্তিশালী কূটনৈতিক সখ্যের কারণে তারা প্রস্তাবে ভেটো দেয়নি। মস্কো ও বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রস্তাবের মূল শর্তগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও কাঠামো সম্পর্কে স্পষ্টতা নেই। এ ছাড়া পরিকল্পনায় জাতিসংঘের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়নি এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের প্রতিশ্রুতিও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে অন্তত ৯৮ জন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর হেফাজতে নিহত হয়েছে। গাজা থেকে আটক শত শত মানুষ নিখোঁজ হওয়ায় প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসÑইসরায়েল (পিএইচআরআই)। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। পিএইচআরআই-এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছেÑমৃত্যুর কারণ হলো শারীরিক নির্যাতন, চিকিৎসায় অবহেলা ও অপুষ্টির মতো বিষয়। এ তথ্য সংগ্রহে তারা ব্যবহার করেছে তথ্য অধিকার আইনের আবেদন, ফরেনসিক রিপোর্ট, আইনজীবী, কর্মী, স্বজন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার। যুদ্ধের প্রথম আট মাসের বিষয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়েছে। ওই সময়ের সরকারি হিসাব বলছে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে নজিরবিহীন মৃত্যুহার দেখা গেছে গড়ে প্রতি ৪ দিনে একজন করে বন্দি মারা গেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সর্বশেষ হেফাজতে মৃত্যুর তথ্য হালনাগাদ করেছে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত। আর ইসরায়েল প্রিজন সার্ভিস দিয়েছে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য। কিন্তু পিএইচআরআই গবেষকেরা এই সময়সীমার পর আরও ৩৫টি মৃত্যুর ঘটনা শনাক্ত করেছেন এবং সেগুলোও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলিয়ে নিশ্চিত করেছেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!