মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় একটি হাসপাতালে অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ম্রাউক-ইউ জেনারেল হাসপাতালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে থাকা ত্রাণকর্মীর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ত্রাণকর্মী ওয়াই হুন অং জানান, হাসপাতালে বোমা নিক্ষেপের পরপরই বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা ৩১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’ তার ভাষ্য, অন্তত ৬৮ জন আহত হয়েছেন। রাতের বেলা হাসপাতালের বাইরে সারিবদ্ধভাবে সাদা কাপড়ে মোড়ানো লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে হামলার বিষয়ে জান্তা সরকারের মুখপাত্রের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করছে আরাকান আর্মি (এএ)। এই জাতিগত রাখাইন সশস্ত্র গোষ্ঠী বহু বছর ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে। বুধবার রাতে এএ-র স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রাত ৯টার দিকে বিমান হামলায় হাসপাতালে ভর্তি ১০ জন রোগী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
বিশ্লেষকদের মতে, চলতি মাসেই অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে বিদ্রোহীদের দখলে থাকা অঞ্চলগুলো পুনর্দখলে নেমেছে সামরিক জান্তা। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধের তীব্রতা বাড়ছে, আর বিমান হামলা এখন জান্তার অন্যতম প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছে। বিদ্রোহীরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে এবং নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ভোটগ্রহণ ঠেকানোর কথা জানিয়েছে।
বর্তমানে রাখাইনের ১৭টি প্রশাসনিক অঞ্চলের মধ্যে ১৪টিই এএ-র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সংগঠনটি নিজস্ব ভূখ-েই কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংঘাত পর্যবেক্ষকেরা। এই পরিস্থিতিতে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
হাসপাতালে বিধ্বংসী হামলা রাখাইনে চলমান সংঘাতকে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
