ঢাকা শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ভয়ংকর দুই ভূতের সিনেমা

আনন্দ আড্ডা ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০১:১৫ এএম

যখন সুপারহিরো, সিক্যুয়েল আর পুরোনো সিনেমার রিবুট দেখে দেখে হাঁপিয়ে উঠেছেন দর্শক, তখন হঠাৎ ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে হরর ঘরানার সিনেমা। সম্প্রতি সারা বিশ্বেই হরর সিনেমা নির্মাণের হার বেড়েছে। এ বছর এখনো পর্যন্ত হলিউডের ব্যবসাসফল সিনেমার তালিকায় হরর সিনেমার সংখ্যা উল্লেখ করার মতো।

মার্কিন সংস্থা কমস্কোরের এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর উত্তর আমেরিকার মোট টিকিট বিক্রির ১৭ শতাংশই এসেছে হরর সিনেমার হাত ধরে, যা ২০২৪ সালে ছিল ১১ শতাংশ; এক দশক আগেও যা ছিল মাত্র ৪ শতাংশ।
প্রযোজক, স্টুডিও প্রধান ও হলমালিকদের মতে, হরর সব সময়ই ছিল উদ্বেগ থেকে মুক্তির উপায়। আজকের দুনিয়ায় সেই মহামারির পরবর্তী ধাক্কা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আশঙ্কা, শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় বা বর্ণবাদ হরর চলচ্চিত্রে জায়গা করে নিচ্ছে।

হরর সিনেমার এই জয়রথে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও দুটি সিনেমা। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তি পেয়েছে মার্কিন হরর থ্রিলার ‘ওয়েপনস’। একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সেও মুক্তি পায় সিনেমাটি। সেই সঙ্গে বাড়তি উপহার হিসেবে থাকছেও জনপ্রিয় তুর্কি হরর সিনেমা ‘সিকিন’ সিরিজের নতুন সিনেমা ‘সিকিন ৮’। এই সিনেমাটিও একইদিনে মুক্তি দেয় স্টার সিনেপ্লেক্স।

‘ওয়েপনস’ : জ্যাক ক্রেগার পরিচালিত আমেরিকান রহস্যময় হরর থ্রিলার সিনেমা ‘ওয়েপনস’। এতে অভিনয় করেছেন যশ ব্রুলিন, জুলিয়া গার্নার, ক্যারি ক্রিস্টোফার, অস্টিন আব্রামস, অ্যামি ম্যাডিগানসহ আরও অনেকে।
মেব্রুক নামের একটি ছোট শহরে, একই ক্লাসের ১৭ জন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র এক রাতে ২.১৭ মিনিটের সময়ে একযোগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। শুধুমাত্র একজন, অ্যালেক্স লিলি পরের দিন স্কুলে উপস্থিত হয়। নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীদের খোঁজে নামে অভিভাবক, পুলিশ, শিক্ষকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এর মধ্যে কিছু অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা তাদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। 

সিনেমাটি ছয়টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত। প্রতিটি অধ্যায়ভিত্তিক চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প এগিয়ে যায়। প্রতিটি অধ্যায় একটি ছোট ঘটনার কিস্তিকে আলোচনায় নিয়ে আসে এবং চূড়ান্ত ক্লাইমেক্সের দিকে এগোতে গিয়ে ধ্বংসাত্মক ঘটনা উন্মোচিত করে। ওয়েপনস সবার কাছে ২০২৫ সালের অন্যতম সেরা হরর-থ্রিলার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আইএমডিবি, রোটেন টমেটোস ইতোমধ্যে সিনেমাটির ইতিবাচক সমালোচনা করেছে।

‘সিকিন ৮’ : তুর্কি ভাষার সুপারন্যাচারাল হরর সিনেমা ‘সিকিন ৮’। এটি সিরিজের অষ্টম কিস্তি। এই সিরিজের পূর্ববর্তী কিস্তি ‘সিকিন ৭’ গত বছরের ১৪ জুন মুক্তি পেয়েছে। এক বছর পর পর্দায় এসেছে নতুন কিস্তি। অ্যালপার মেস্তকি পরিচালিত সিনেমাটি তুরস্কে মুক্তির পর দর্শকদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে। এতে একজন পুরুষ এবং তার পরিবারকে ভয়াবহ অতিপ্রাকৃত শক্তির দ্বারা অত্যাচারিত হতে দেখা যাবে, যা শুরু হয় যখন সে তার বৃদ্ধ মাতাকে বাসায় আনে। এই অংশে অরহান চরিত্রটিকে সিরিজের মূল নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যিনি পূর্বের কিস্তিগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে প্রথম দুই কিস্তিতে কোনো নির্দিষ্ট হিরো বা ভিলেন ছিল না বরং জাদুবিদ্যা ও কালো যন্ত্রণা প্রধান বিষয় ছিল, যা পরের কিস্তিতে বদলেছে বলে মনে হচ্ছে।

সিনেমাতে জিন তত্ত্ব, ব্ল্যাক ম্যাজিক এবং পারিবারিক গোপন রহস্যের মিশ্রণ রয়েছে। প্রধান চরিত্র ফাতিহ নামে একজন মানুষ, যিনি তার স্ত্রী বরনার অনুরোধে তার বৃদ্ধ মা গুনহুলকে পরিবারের বাইরে বৃদ্ধাশ্রমে স্থানান্তর করেন। মা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর, ঘরের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং ধীরে ধীরে অচেনা ও রহস্যময় ঘটনা বাড়তে থাকে।

একটি শান্ত পরিবেশে অদ্ভুত শব্দ, ছায়া এবং অতিপ্রাকৃত ঘটনা ফাতিহের পরিবারকে গ্রাস করে। ফাতিহের অনুশোচনায় ভরা মন একটি মানসিক ও পারিবারিক সংকটের মধ্যে পড়ে। ফাতিহ শেষ পর্যন্ত তার মাকে বাড়িতে ফেরায়, কিন্তু সেই মা একই ব্যক্তি নন। এরপর ঘটতে থাকে ভয়ংকর সব ঘটনা।