বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে অতি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
গতকাল বুধবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের এক বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের নেতাদের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের এই বৈঠক হয়। আগামী ৩০ আগস্ট ময়মনসিংহে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সমাবেশ উপলক্ষে এই বৈঠক হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিলেন। আমরা আলোচনা করেছি। তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আমরা কথা বলে এসেছি। একই সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করা, উনাদের (প্রধান উপদেষ্টা) যে প্রতিশ্রুতিÑ ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হবে, আমরা মনে করি, অতিদ্রুত সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আর যেন কোনো অস্পষ্টতা না থাকে। সেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দলের তরফ থেকে আমরা সেটা উনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) বলে এসেছি। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এটুকু বলেছেন যে, সেই ব্যবস্থাটা নেবেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সবসময় যেটা চাইব, অতি দ্রুত নির্বাচন। রাজনৈতিক সরকার না থাকলে এই সমস্যাগুলো আরও বৃদ্ধি পায় সেজন্য আমরা সেটাই বলেছি।
নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারিকে টার্গেট করে সরকার এগুচ্ছে কি নাÑ প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব স্পষ্টভাবে বলেন, আমি তো দেখছি, এগুচ্ছে। ক্রাইসিস সৃষ্টি হলে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ডাকেন। আমি যাই। তবে আমি মনে করি, এই এ্যানগেজমেন্টটা ঘন ঘন হলে আরও ভালো হতো। তাহলে হয়তো সমস্যাগুলো তৈরি হতো না।
বিমান দুর্ঘটনার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক প্রাণ গেছে। আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান তারেক রহমান শোক জানিয়েছেন। তা ছাড়া মাইলস্টোন স্কুলে দুই উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ সেক্রেটারিয়েটে পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতায় ছাত্রদের আন্দোলনে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, প্রশাসনিক জটিলতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সম্ভবত যারা ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে আমাদের এই সভায় ডেকেছিলেন। আমরা আমাদের পূর্বের যে কমিটমেন্ট, সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা, সেটা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতির মানেই হচ্ছে প্রতিপক্ষকে কথা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা করা। নিজেরটাকে এস্টাবলিস করার চেষ্টা করা। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে শত ফুল ফুটতে দিতে হবে আপনাকে।
দলীয়প্রধান সরকার প্রধান হবে কি নাÑ এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব সম্পর্কে মহাসচিব বলেন, এটা একটা প্রস্তাব। এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আলোচনার মধ্য দিয়ে আসবে। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি, অন্য দলগুলোও দিয়েছে। এখন দেখা যাক আলোচনার মধ্য দিয়ে কোনটা প্রতিষ্ঠিত হয়।
উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এটাকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছি, তারাও (সরকার) দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছে। এটা দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
বৈঠকে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদের নেতৃত্বে ২০ জন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকারও উপস্থিত ছিলেন।
