সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট প্রকাশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, এই অধ্যাদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে, গত ৩ জুলাই উপদেষ্টা পরিষদের ৩২তম বৈঠকে সংশোধিত এই অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়। ভেটিং শেষে চূড়ান্তভাবে অধ্যাদেশটির গেজেট প্রকাশ করা হলো।
সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইন)-এর ধারা ৩৭ক-এর পরিবর্তে নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে- ‘যদি কোনো সরকারি কর্মচারী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেন, সরকারের আদেশ, পরিপত্র বা নির্দেশ বাস্তবায়নে বাধা দেন বা অন্যকে প্ররোচিত করেন; ছুটি বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন বা কর্মবিরতিতে অংশ নেন কিংবা অন্য কর্মচারীদের কাজে বাধা দেন- তবে তা ‘সরকারি কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে পদাবনতি, বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।’
অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সাত দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিধান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পেলে আরও সাত দিনের সময় দিয়ে পুনরায় নোটিশ দেওয়া যাবে। এরপর সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
তবে, দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করার সুযোগ পাবেন, যা দণ্ড ঘোষণার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে করতে হবে।
এর আগে, ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদ প্রাথমিকভাবে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন দেয়।
এরপর ২৫ মে রাতে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে ২৪ মে থেকে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন।
এই অধ্যাদেশকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবি জানায় তারা। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ৪ জুন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়।