ঢাকা শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

নির্বাচনের আগে দুই-চারটা শীর্ষ অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে: ডা. শফিকুর

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি- সংগৃহীত

নির্বাচনের আগে দুই-চারটা হলেও শীর্ষ অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘সব বিচার এই সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়, কিন্তু বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সরকার ও বিচার বিভাগের আন্তরিকতা দেখতে চাই। অবশ্যই দৃশ্যমান কিছু দেখতে চাই। দুই-চারটা হলেও শীর্ষ অপরাধীদের শাস্তি দেখতে চাই। এরপর এই ধারা চলমান থাকবে। যারা ক্ষমতায় আসবে, তাদের নৈতিক দায়িত্ব হবে বিচার চালিয়ে যাওয়া ও সমাপ্তির দিকে নিয়ে যাওয়া।’

বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে’ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার ও অপরাধীদের বিচার শুরু করে নির্বাচন দিতে হবে। তা অবশ্যই আগামী বছরের প্রথমার্ধে হতে হবে। মৌলিক সংস্কার শেষ না করে আগের মতো নির্বাচন হলে এটি জাতির জন্য আবারও দুঃখ ও বেদনার কারণ হবে। আমরা এটা দেখতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মানুষের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। আগের তিনটি নির্বাচনে মানুষ তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। মনের মতো দল বা ব্যক্তিকেও বাছাই করতে পারেনি। এজন্য আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড কখনো দাবি করিনি, বরং আমরা এটা অস্বীকার করেছি। কারণ একজন বা দুজনকে মাস্টারমাইন্ড বললে বাকিদের আন্ডারমাইন করা হবে। আমরা কাউকে আন্ডারমাইন করতে চাই না। আমরা প্রত্যেক যোদ্ধাকে সম্মান জানাতে চাই। সব যোদ্ধারাই আমাদের মাস্টারমাইন্ড। কোনো একক ব্যক্তি নয়।’

রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে শহীদ ও আহতদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হবে জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা শুকনো কথায় চিড়া ভিজাতে চাই না। দেশের বাইরে আমাদের বেগমপাড়া নেই, দাদার বাড়ি-নানার বাড়ি নেই। আমাদের বিদেশি প্রভু নেই। আমাদের প্রভু একজন। প্রতিবেশী দেশ অগ্রাধিকার পাবে, কিন্তু আমাদের অধিকার হরণ করতে চাইলে ১৮ কোটি মানুষ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের চেয়ারে বসে বাংলাদেশের কোনো সম্পদ কীভাবে নিজের ও শ্বশুরবাড়ির আয়ত্তে আনা যায় সেই রাজনীতি আমরা করব না। আগামীতে যারা সামাজিক দায়িত্বে নির্বাচিত হবেন, তারা আগের দলের কাছে সম্পদের হিসাব-বিবরণী দেবেন। পরে দেশের কাছে জমা দেবেন। প্রতিবছর এই বিবরণী জমা দিতে হবে। এইভাবে আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব।’

দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি জামায়াতের সংস্কৃতি নয় উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘মানুষের ইজ্জতে হাত দেওয়া আমাদের রাজনীতি না। যে দল তার কর্মীদের এভাবে গড়ে তুলেছে, সেই দল ক্ষমতায় গেলে দেশকেও এভাবে গড়ে তুলবে। জামায়াতের হাতে দেশের একজন মানুষও অনিরাপদ থাকবে না।’

চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট যারা করে তারা ভিক্ষুকের চেয়েও খারাপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করা হালাল। যদি পেটের অবস্থা এমন হয়, তাহলে আপনি ভিক্ষা করেন। কেন সিন্ডিকেট করবেন? কেন চাঁদাবাজি করবেন? আমি কোনো দলকে বলছি না। এরকম চরিত্র যাদের, আমি তাদের বলছি। তবে তিনি যদি কোনো দলের নেতা বা কর্মী হন, তাহলে আমার কিছু করার নেই।’