রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০৫:৫৬ এএম

ডাকসু নির্বাচন

গণরুম-গেস্টরুম কালচার বন্ধ করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০৫:৫৬ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে লড়ছেন ৪৬২ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিপি পদে ৪৮ জন, জিএস পদে ১৯ জন ও এজিএস পদে ২৮ জন। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বামপন্থি ছাত্র সংগঠন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টির ছাত্র সংগঠন বাগছাসসহ বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনে জিততে সবাই আশ্বাস দিচ্ছেন নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য অভিশাপ গেস্টরুম, গণরুম ও অপরাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধের। তবে বিগত সরকারের আমলসহ দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা এই অপব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ করা চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বেশির ভাগ প্রার্থী। কারণ প্রতিটি হলে সিটের সংকট রয়েছে। এর সুযোগ নিয়ে নতুন ছাত্রদের ওপর একধরনের অত্যাচার চালান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতারা।  

এদিকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দিয়ে বিতর্ক থেকে বাদ পড়েনি খোদ ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। ‘নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে কে কী করেছে, সব বলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন’ ভিসি; এমন একটি সংবাদ ছাড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে উপাচার্যের এমন বক্তব্য সঠিক নয় এবং বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে, নির্বাচনের ত্রুটিপূর্ণ তথ্যের কারণে ৪৭ প্রার্থীর বাতিল মনোনয়ন স্থগিত করেছে কমিশন, যাদের মধ্যে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩৪ জন আপিল করেছেন।

আলোচিত এই নির্বাচনে ঢাবির সব কটি হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিতে পারেনি কোনো ছাত্র সংগঠনই। ছাত্রীদের জন্য পাঁচটিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট হল আছে ১৮টি। এর মধ্যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সর্বোচ্চ ১৪টি হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিতে পেরেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ কোনো হলেই প্যানেল দেয়নি। অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোরও একই অবস্থা। ভিপি (সহসভাপতি) ও জিএসসহ (সাধারণ সম্পাদক) প্রতিটি হল সংসদে পদ আছে ১৩টি। সে হিসাবে সব হল মিলিয়ে মোট ২৩৪টি পদ আছে। এর বিপরীতে এবার প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে ১ হাজার ১০৮ জন শিক্ষার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’-এর নেতারা বলছেন, নির্বাচনি কৌশলের অংশ হিসেবে তারা হলগুলোতে কোনো প্যানেল দিচ্ছেন না। তবে হল সংসদের নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেককে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।

হলে রাজনীতি থাকা না থাকা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়ায় এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মতামত নিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলাম। এই মতামতের ভিত্তিতে হলে রাজনীতির বিষয়ে একটা রূপরেখা তৈরি করা সম্ভব ছিল।

ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও ডাকসু নির্বাচনে জিএস পদপ্রার্থী এস এম ফরহাদ। হলের ভেতরে ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি না, থাকলে তার ‘রূপ’ কেমন হবে, তা নিয়ে ক্যাম্পাসে নানা তর্কবিতর্ক চলছে। হল সংসদের নির্বাচনে দলীয় প্যানেল শিক্ষার্থীদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, সেই আলোচনাও আছে। হলে ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ৮ আগস্ট রাতে ক্যাম্পাসে যে বিক্ষোভ হয়, তাতে শিবির, ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতাদের কেউ কেউ নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন। এমন প্রেক্ষাপটে হল সংসদের নির্বাচনে দলীয় প্যানেল দেওয়ার মাধ্যমে হলের ভেতরে ছাত্র রাজনীতিকে একধরনের বৈধতা দেওয়া হবে বলে শিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতারা মনে করেন।

এদিকে, ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে কে কী করেছে, সব বলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। তিনি বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন একটি বড় আয়োজন। এই আয়োজনে সবাই যতক্ষণ আমার হাত ধরে থাকবেন, ততক্ষণ আমি মাঠে থাকব; যেখানে আমার হাত ছেড়ে দেবেন, আমি সবাইকে ডেকে পরিষ্কার বলে দেব। উপাচার্য বলেন, পুরো জাতি ডাকসু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ভালো পরিবেশে ভোট আয়োজনের চেষ্টা চলছে। কমিশনের দিকনির্দেশনায় সব হচ্ছে। সব অংশীজনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্যায় দেখলে প্রতিহত করার ধারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বজায় ছিল। যেকোনো পরিস্থিতিতে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এ সময় সেনাবাহিনীসহ সব অংশীজকে একসঙ্গে মিলে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

তবে, নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির জনসংযোগ দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস উপলক্ষে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে বের হওয়ার পথে সাংবাদিকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের কাছে ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চান। উপাচার্য এ বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দেন। কিন্তু কয়েকটি গণমাধ্যম ‘ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে দায়িত্ব ছেড়ে সব বলে দেব : ঢাবি ভিসি ড. নিয়াজ আহমদ খান’ শিরোনামে উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উপাচার্যের বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। 

নির্বাচনের ত্রুটিপূর্ণ তথ্যের কারণে ৪৭ প্রার্থীর বাতিল মনোনয়ন স্থগিত করেছিল ডাকসু নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩৪ জন আপিল করেছেন। নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন বলেন, আচরণবিধি নিয়ে কড়া নির্দেশনার ফলে এখনো লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি। ২৫ তারিখের মধ্যে যে টাইমলাইন আছে, দুপুর ১টার ভেতরে যে কেউ নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। আমরা একটা নিরাপদ পরিবেশে সবাইকে এক জায়গায় নিয়ে নির্বাচনটা করতে পারলে সেটা ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভালো হবে, আমাদের জন্য ভালো হবে, দেশের জন্য ভালো হবে। 

এদিন, ডাকসু নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলে ভিপি (সহসভাপতি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অবিযোগ করেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও বট আইডি দিয়ে প্রোপাগান্ডার কারণে মব তৈরির শঙ্কা রয়েছে।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর। এবারের ডাকসু নির্বাচনে লড়ছে ৮ প্যানেল;  ছাত্রদলের প্যানেল/ (পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা); গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’; ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’/ (পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা); উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র ঐক্যজোট’; বামপন্থি শিক্ষার্থীদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’/ (পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা); ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’/ (পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা); ইসালামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ এবং সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকারের স্বতন্ত্র প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’; বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিসিএল সমর্থিত প্যানেল ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪ পরিষদ’।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!