আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দোসররা এখন টাকার বিনিময়ে বিএনপিতে প্রবেশ করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে দলীয়ভাবে কঠোর অবস্থান নিলেও মোটা টাকার বিনিময়ে সুযোগ সন্ধানীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিএনপিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি এমন আলোচিত ঘটনা ঘটেছে ঢাকার পাশের এলাকা গাজীপুরে। অভিযোগ উঠেছে- গাজীপুর মহানগর, জেলা, উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটিতে নব্য বিএনপি ও পদধারী আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিএনপির কমিটিতে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে চলছে অস্থিরতা! ত্যাগী নেতাকর্মীরা এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ।
তাদের অভিযোগ- দলের কমিটিতে এখন নব্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক নেতাকর্মীরা টাকার বিনিময়ে জায়গা পেয়েছে। তাদের প্রশ্ন ফ্যাসিস্টরা বিএনপির কমিটিতে কীভাবে এলো।
মুন্না নামের বিএনপির এক নেতা জানান, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেটা নিয়ে বিএনপি নেতাদের মধ্যে অনুশোচনা নেই বললেই চলে। মোটা টাকা লেনদেনে অসহায় ত্যাগীরা। ৫ আগস্টের পর টাকার বিনিময়ে গাজীপুর বিএনপিতে চলছে আওয়ামী লীগ টেকানোর প্রতিযোগিতা! সেই সাথে চলছে ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন। কমিটিতে নব্য বিএনপি ও ফ্যাসিস্টরা অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এ নিয়ে জেলার স্থানীয় রাজনীতিতে অস্থিরতা চলছে। অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন ও ইশরাকের রাজনৈতিক রোষানলে ত্যাগীরা। এর ফলে নিবেদিত নেতাকর্মীরা রাজনীতি ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন।
স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানান, বিগত দিনে যারা রাজপথে ছিল তারা এখন নব্য বিএনপি ও ফ্যাসিস্টদের কাছে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একাধিক ত্যাগী নেতাকর্মী সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে তথ্যপ্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের বেশ কয়েকটি তথ্যপ্রমাণ দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের হাতে আসে। রূপালী বাংলাদেশ তদন্ত করে এর সত্যতাও পেয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর জেলা বিএনপির বর্তমান দায়িত্বে থাকা নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় একাধিক নেতাকর্মী ও দলীয় সূত্র জানায়, এসব অপকর্মে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান ও সদস্য সচিব ডক্টর ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী। মূলত তারাই আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠন করেন।
দলীয় সূত্র মতে, গাজীপুরে ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ শেল্টারের প্রতিযোগিতা চলছে। বিএনপির কিছু কিছু নেতাকর্মী কোটি কোটি টাকা খেয়ে আওয়ামী লীগকে দলে পুনর্বাসন করছে। কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলেও বিএনপি এক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে অনেকটা দুর্বলতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা।
জানা যায়, গাজীপুর জেলা বিএনপি এখন তিন নেতার হাতে। তারা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক, কমিটির সদস্য সচিব ও আহ্বায়ক। তারা ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন ও কমিটি বাণিজ্যে নেমেছেন বলে একাধিক সূত্রে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বলে দলীয় সূত্র জানায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা, উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠনের মাধ্যম নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, কয়েক কোটি টাকার বিনিময়ে ৩৫ জন আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের বিএনপিতে জায়গা করে দিয়েছে সুবিধাবাদী বিএনপির একটি চক্র। যার কারণে ত্যাগীদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় আনা আজম খানদের মতো ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীরাও কমিটিতে ঠাঁই পাননি। উল্টো একই পরিবারের একাধিক জনকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে জেলা থেকে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
গাজীপুর জেলা বিএনপি ও বিএনপির নয়াপল্টন অফিসের দলীয় একটি সূত্র মতে, গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক সিদ্দিকী নিজেই বিএনপির সদস্য হয়েছেন ২০২২ সালে। তিনি এর আগে কখনো দলের সদস্যও ছিলেন না। তার বড় ভাই ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে দলকে বারবার বেকায়দায় ফেলেছেন। ইশরাক সিদ্দিকী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হয়েই ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাইনাস ও আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করে যাচ্ছেন। এর প্রভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলের সিনিয়র ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা। বেশ কয়েক মাস ধরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দলে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সূত্র মতে, ত্যাগীরা অবমূল্যায়ন ও যোগ্য পদ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় সম্প্রতি তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছেন। যেগুলোর তদন্ত শুরু করেছে বিএনপির সাংগঠনিক কমিটি। অভিযোগ দানকারীদের মধ্যে ৮০ ভাগ নেতাকর্মী হলেন বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ। তা ছাড়া বিএনপির নতুন কমিটিতে যাদের রাখা হচ্ছে তাদের অনেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ছিল। আর কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বিগত সরকারের সময়ে জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার ও ত্যাগীরা।
কথা হয় গাজীপুরে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি বহু মামলার আসামি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনবার কারা নির্যাতিত হন। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক ভিপি-জিএস ছিলেন এবং ছাত্রদলের উপজেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্থলে আহ্বায়ক করা হয়েছে নুরুল ইসলামকে। তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো মামলাও নেই। আওয়ামী লীগের সাথে মিলেমিশে তার ভাই কামাল সিকদার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকার সুবাদে তিনি হাসিনা সরকারের পতনের পর দলে সক্রিয় হয়েই ত্যাগীদের মাইনাস করেন।
জয়নাল নামের বিএনপির এক নেতা জানান, পারভেজ আহমেদ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বিগত সরকারের সময়ে তিনিও একাধিকবার জেল খেটেছেন। তার নামে এখনো ২০টির অধিক মামলা রয়েছে। তাকে বাদ দিয়ে যাকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়েছে তিনি জেলা সদস্যসচিব ইশরাক সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত কর্মচারী এবং ঝুট ব্যবসায়ী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এমনটা চলতে থাকলে বিএনপি আগের মতো গর্তে পড়বে।
একাধিক স্থানীয় নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দলের ত্যাগীদের এখন তাদের আর দরকার নেই। টাকার কাছে তারা হেরে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে উপজেলা আহ্বায়কের পদ দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতি করে আর কী হবে? দল কি বিগত দিনের কথা ভুলে গেছে, না কি ত্যাগী নেতাকর্মীদের আর দরকার নেই।’
উপজেলা বিএনপির নেতারা জানান, গত ১৪ মে কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। এরপর তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। ঠিক এক মাস পর কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদারকে আর সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয় মামুদ সরকার ও সদস্যসচিব করা হয় মহসিন উজ্জামানকে। তারা কেউই গত আন্দোলনে মাঠে ছিলেন না। মোটা টাকার বিনিময়ে তারা পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন বলে তারই ঘনিষ্ঠজনরা জানান।
এদিকে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মামুদ সরকার বিগত ১৬ বছর সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল সিকদারকে ম্যানেজ করে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মানুষের জমি দখলের অভিযোগ থাকলেও দল কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি ইশরাক সিদ্দিকীর ছত্রছায়ায় মানুষের জায়গাজমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সদস্যসচিবও বিগত সরকারের সুবিধাভোগী। বিগত ১৬ বছর তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বিগত সরকারের সময়ে আন্দোলনের জন্য জেল খেটেছেন। তার জায়গা হয়নি আহ্বায়ক কমিটিতে।
এদিকে গাজীপুরের জেলা, উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে গত ১৫ জুন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একই সময়ে নতুন কমিটির পক্ষে পাল্টা মিছিল হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কালিয়াকৈর পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দলীয় নেতাকর্মীরা আরও জানান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কালিয়াকৈরে আরও কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটিতেও দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের কমিটিতে পদ-পদবি দিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন।
ইশরাক আহমেদের মনগড়া কমিটির প্রতিবাদ জানাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শ্রমবিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সাইয়েদুল আলম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মজিবুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা এসব কমিটি ঠেকাতে ঐক্য গড়ে তোলেন। এরই মধ্যে ঐক্য ঘোষণা দিয়ে নেতারা কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ড ও সফিপুর বাজারে বেশ কয়েকটি বড় সভা ও সমাবেশ করেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গত জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৫টি ওয়ার্ড এবং ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ৮ আগস্ট মৌচাক, আটাবহ ও বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে সুমীর কুমার গুহ আর সদস্যসচিব করা হয়েছে রিপন আল হাসানকে। বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দীর্ঘদিন যারা জেল-জুলুমের শিকার হয়ে রাজপথের রাজনীতি করে আসছে তারা কমিটি বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ করেন।
বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান বলেন, দল করতে গিয়ে জেল খেটেছি। জেলে থাকায় মায়ের মৃত্যুর আগে শেষ কথাটাও বলতে পারিনি। ডান্ডাবেড়ি আর হাতকড়া লাগিয়ে মায়ের জানাজা পড়েছি। তারপরও কমিটিতে যোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি। দলের জন্য আর কী করলে আমাদের মতো নেতার জায়গা হবে প্রশ্ন রাখেন তিনি। চাপাইর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডিজে রাব্বানি ও ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন আন্দোলনের কারণে দীর্ঘ আট মাস কারাবরণ করেছেন।
তবুও তাদের জায়গা হয়নি ইউনিয়ন কমিটি ও উপজেলার আহ্বায়ক কমিটিতে। মৌচাক ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, যাদের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে তারা বিগত সময়ে গলায় নৌকার ব্যাজ ঝুলিয়ে মিছিল করে আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচন করেছে।
জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলে তিনি একবার রিসিভ করলেও তিনি কোনো কথা বলেননি। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর মোবাইল নম্বরে কল করলে তিনি ফোন কেটে দেন।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, কমিটি ঘোষণা করা হলেও বিষয়টি জানি না। এটার দায়িত্ব জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। তা ছাড়া কোনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যদি কমিটিতে প্রবেশ করে সেটারও দায়িত্ব আমার নেই। এর কারণ হলো কমিটির অনুমোদনের পাওয়ার আমার নেই।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ডক্টর ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, টাকা নিয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে, সেটা মিথ্যা। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছবি থাকলে সে বিএনপির কমিটিতে থাকতে পারবে না, এটা তো ঠিক না। তাহলে পুরো গাজীপুর জেলায় কেউ বাদ যাবে না। এক হিসেবে সবাই তো ফ্যাসিস্টদের দোসর ছিল, এভাবেই বলা যায়।
তাহলে আপনি আওয়ামী লীগের নেতাদের কমিটিতে রাখতে চাইছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা তো বলিনি জাস্ট একটা কথা বললাম।
এ বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, রাজপথের যোগ্য নেতাদের দলে মূল্যায়ন করতে হবে। যারা পদে থেকে এসব করবে না তাদের বিরুদ্ধে দল কঠোর হবে। তা ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের সব বিষয় তদারকি করছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন