ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

‘গণধর্ষণের হুমকি’ দেওয়া  আলী ঢাবি থেকে বহিষ্কার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ০৭:৫৯ এএম
আলী হুসেন

ডাকসু নির্বাচনের এক প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আলী হুসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। ঢাবি প্রশাসন বলছে, ‘এটি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডারে প্রদত্ত প্রক্টরের এখতিয়ারভুক্ত সর্বোচ্চ শাস্তি।’ 

গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে গঠিত প্রক্টরিয়াল সত্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশের আলোকে তাকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’ আলী হুসেন শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী। তার শ্রেণি রোল ৫৪ এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২০২০২১২৭৬৮।

ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদের ডাকসু প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম। ৫ আগস্টের আগে ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন, এর পরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের জিএস প্রার্থী হলেনÑ এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিট আবেদনে। গত সোমবার ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেই আদেশ স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এরপর রিটকারী ফাহমিদাকে নিয়ে সোমবার বিকালে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন আলী হুসেন।

ফেসবুকে আলী হুসেন লেখেন, ‘হাই কোর্টের বিপক্ষে এখন আন্দোলন না করে আগে একে গণধর্ষণের পদযাত্রা করা উচিত। কেউ এসব শব্দচয়ন দেখে সুশীল হইয়েন না, যে একে সাপোর্ট করবে ওপরের কথাটা তার জন্যও প্রযোজ্য।’ আলী হুসেন একজন ‘শিবির নেতা’ দাবি করে গত মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল। এর আগে সোমবার রাতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় ছাত্রশিবির। ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী নাইম হাসান হৃদয়ও একটি লিখিত অভিযোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কও সংবাদ সম্মেলন করে আলী হুসেনের শাস্তি দাবি করে। এই পরিস্থিতিতে অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ মাহবুব কায়সারকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে আরও দুই সহকারী প্রক্টর শেহ্রীন আমিন ভূইয়া এবং মো. রেজাউল করিম সোহাগকে সদস্য হিসাব রাখা হয়। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই আলী হুসেনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাবি প্রশাসন।