সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম

নেপালে ঘনাচ্ছে নয়া সংকট

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম

নেপালে ঘনাচ্ছে নয়া সংকট

প্রায় এক সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ ও সহিসংতার পর গত শনিবার নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পান সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। নতুন প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেছিলেন নেপালের মানুষের। কিন্তু হঠাৎ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্ট পুনর্বহালের দাবিকে কেন্দ্র করে নেপালে আবারও দেখা দিয়েছে নতুন রাজনৈতিক সংকট। এমনকি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে অসাংবিধানিকও বলছে রাজনৈতিক দলগুলো। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

বিবিসি বলছে, নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেলকে ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্ট পুনর্বহালের আহ্বান জানিয়েছে। গত শনিবার দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএল, মাওবাদী কেন্দ্রসহ আটটি দলের প্রধান হুইপদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্ত জনগণের ম্যান্ডেটকে অস্বীকার করছে। পাশপাশি এটি করে নেপালের বিচার বিভাগের প্রতিষ্ঠিত নজিরগুলোরও বিরুদ্ধাচরণ করেছেন রাষ্ট্রপতি। 

জেন-জি আন্দোলনের নেতাদের অন্যতম দাবি ছিল পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া। তবে রাজনৈতিক দলগুলো এটিকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। তাদের মতে, বিক্ষোভকারীদের দাবি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই সমাধান করা উচিত। 

নতুন এই রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও আগামী ৬ মাসের মধ্যে ক্ষমতা ছাড়বেন বলে জানিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। আগামী ৫ মার্চের নির্বাচনের পর গঠিত সরকারের কাছে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। শপথ নেওয়ার পর প্রথম বক্তৃতায় গতকাল রোববার কার্কি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্ব চাইনি। রাজপথের তরুণদের কারণে বাধ্য হয়েই দায়িত্ব নিতে হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্যই এই পদে আসা’।

কার্কি বলেন, ‘আমাদের কাজ করতে হবে জেন-জি প্রজন্মের চিন্তার সঙ্গে মিল রেখে। তারা যা চাইছে, তা হলো দুর্নীতির অবসান, সুশাসন ও অর্থনৈতিক সমতা’। তবে সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি সত্যিই এসব ভাঙচুরকারীরা নেপালি হয়ে থাকে, তবে তারা কীভাবে নিজেদের নেপালি বলতে পারে, এটা ভেবে আমি লজ্জিত’। সহিংসতাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এখন একাধিক চ্যালেঞ্জ। আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভাঙচুর হওয়া পার্লামেন্ট ও সরকারি ভবনগুলো পুনর্নির্মাণ, পরিবর্তনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা তরুণদের আস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্র নিয়ে শঙ্কিত নাগরিকদের আশ্বস্ত করা। পাশাপাশি সহিংসতায় দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করাও সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। এর মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক সংকট নেপালের পরিস্থিতিকে কোন দিকে নিয়ে যাবেÑ সেটাই দেখার অপেক্ষা।

প্রায় এক সপ্তাহের বিক্ষোভ-সহিংসতার পর উত্তাল নেপাল বর্তমানে ধীরে ধীরে শান্ত হচ্ছে। খুলছে দোকানপাট, অফিস, হোটেল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সুশীলা কার্কি। তার পরামর্শেই নেপালের সংসদ ভেঙে দিয়েছেন সে দেশের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল। পাশাপাশি আগামী বছরের ৫ মার্চ নেপালে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। আপাতত ছয় মাসের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নতুন প্রধানমন্ত্রীর। 

এদিকে গত শনিবার নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর রাষ্ট্রপতি পাউডেল সব পক্ষকে সংযম দেখাতে এবং নির্বাচনের আয়োজন সফল করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত কঠিন ও ভীতিকর পরিস্থিতিতেও শান্তিপূর্ণ সমাধান এগিয়ে আসছে। সংবিধান টিকে আছে, সংসদীয় ব্যবস্থা টিকে আছে এবং ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রও টিকে আছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আরও কার্যকর গণতন্ত্রের পথে এগোনোর সুযোগ আছে’।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরু করে নেপালের তরুণ সম্প্রদায় বা জেন-জিরা। দেশজুড়ে বিক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ক্ষুব্ধ জনতা কাঠমান্ডুর পার্লামেন্ট ভবন ও সরকারি দপ্তরে আগুন ধরিয়ে দেয়, এতে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন নিহত হন। গত বৃহস্পতিবার থেকেই নেপালের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হতে থাকে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারফিউ শিথিল করা হয়। তার মধ্যে বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে এখনো অন্তর্বর্তী সরকারে মন্ত্রিসভা গঠন হয়নি। তার আগেই সংসদ পুনর্বহালের দাবি তুলল রাজনৈতিক দলগুলো।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!