বাংলাদেশের সামনে সহজ সমীকরণ ছিল। জিতলেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত। এমন সরল সমীকরণ মেলাতে পারেনি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্য লক্ষ্য নাগালের মধ্যে পেয়েও হতাশ করলেন তারা। পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হেরে এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্ব থেকেই বিদায় নিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সুপার ফোর পর্বে উঠেছিল জাকের আলীরা। এ পর্বে শ্রীলংকাকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন দেখালেও শেষ ম্যাচে হেরে হতাশাজনকভাবে বিদায় নিল তারা। ফলে সুপার ফোর পর্বে তিন ম্যাচ খেলে ২ পয়েন্ট অর্জন করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, দুর্দান্ত জয়ে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট অর্জন করে আরেকটি এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল পাকিস্তান। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। এ নিয়ে চলমান টুর্নামেন্টে তৃতীয়বারের মতো দুদলের ক্রিকেট রোমাঞ্চ দেখার অপেক্ষা।
দুবাইয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ফাইনালে উঠার লড়াইটি হয়েছে লো-স্কোরিংয়ের। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান তুলে পাকিস্তান। জবাবে ৯ উইকেটে ১২৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা অত বেশি ছিল না। ১৩৬ রান করতে পারলেই চতুর্থবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে পারত বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তারা। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেটের পতন ঘটে। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা সাইফ হাসানও এদিন ১৮ রানের বেশি তুলতে পারেননি। হারিস রউফের বলে ধরা পড়েন এই ওপেনার। পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়ও ব্যর্থ হয়েছেন। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্কোর বোর্ডে রান উঠার গতিও শ্লথ হয়ে যায়। যে কারণে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৯/৩। এ বিপর্যয় সামাল দিতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিলে। নেওয়াজের বলে মেহেদী আউট হন। সোহানের ব্যাটে ভালো জবাব দিলেও ইনিংস বেশি লম্বা করতে পারেননি। ছক্কা দিয়ে ইনিংস শুরু করা সোহান ২১ বলে খেলেন ১৬ রানের ইনিংস। এরপর উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন জাকের আলী। বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন তিনি। শামীম হোসেন দুটি ছক্কায় ২৫ রান করলেও সেটি দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদি সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। সাইম আইয়ুব পান ২ উইকেট।
এর আগে টস হেরে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে পাকিস্তানকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। একাদশে ফিরেই নতুন বলে প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। তার বলে পয়েন্টে রিশাদের হাতে সহজ ক্যাচ দেন পাকিস্তানের ওপেনার সাহেবজাদা। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাসকিনের ১০০তম উইকেট শিকারের রেকর্ড এটি। এরপর দ্বিতীয় ওভারেই স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক জাকের আলী। আস্থার প্রতিদান দেন এই বোলার।
সাইম আইয়ুবকে সহজ ক্যাচে পরিণত করেন মেহেদী। দুই ওভারে দুই উইকেট হারানো পাকিস্তান পাওয়ার প্লেতে বেশি রান তুলতে পারেনি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ধরে খেলার চেষ্টা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা ও ফখর জামান। তবে তাদের মধ্যে ২৪ রানের জুটি না হতেই ফাটল ধরান রিশাদ হোসেন। এই লেগ স্পিনারের বলে ফখর (১৩) আউট হলে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ২৯/৩। এরপর তালাত উইকেটে নেমে বেশিক্ষণ টিকেননি। আউট হয়ে যান সালমান (১৯)। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন হারিস (২৩ বলে ৩১), নেওয়াজ (১৫ বলে ২৫) ও শাহিন আফ্রিদি (১৩ বলে ১৯)। বাংলাদেশের পক্ষে ২৮ রানে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। দুটি করে উইকেট পান রিশাদ ও মেহেদী। মোস্তাফিজুর রহমান পান এক উইকেট।