- বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরোনো লোহা বিক্রির প্রলোভনে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ
- বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে চুরিসহ কেন্দ্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল বিক্রি
- কখনো কয়লা, কখনো বিদ্যুৎ প্রবাহের তার কখনোবা লোহার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে
- এক-তৃতীয়াংশ দেশি কর্ম থাকার কথা থাকলেও বহাল তবিয়তেই ভারতীয় কর্মীরা
- দেশি-বিদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ
- ভারত ও বাংলাদেশের কর্মীদের মধ্যে বেতনবৈষম্যের সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে দুদক
- ভারতীয়দের তিন বছর কর মওকুফ থাকলেও দেশি কর্মীদের এ সুবিধা নেই
- চুরির অভিযোগে কিছুদিন পরপর গ্রেপ্তার হলেও কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নেই মাথাব্যথা
- কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় ব্যাহত বিদ্যুৎ উৎপাদন
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অব্যবহৃত ও পুরোনো লোহা বিক্রয়ের ভুয়া মালিক সেজে প্রতারণাপূর্বক প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে সম্প্রতি। এর আসামি হিসেবে গত রোববার সেলিম শেখ নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি বিশেষ টিম। জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন বালিয়াখালী এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার পেছনে কেন্দ্রটির উচ্চ পর্যায়ের কর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বেশ তোড়জোড় করেই বিগত সরকারের আমলে উদ্বোধন করা হয়েছিল দেশের অন্যতম বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির।
উদ্বোধনের প্রথম আট মাসেই যান্ত্রিক ত্রুটিসহ কয়লা সংকটে সাতবার বন্ধ হয় এর উৎপাদন। কোনো মাসেই উৎপাদন সক্ষমতার এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের মধ্যে কেন্দ্রটি এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করলেই কেন্দ্রটির বয়লারের মধ্যের টিউব ফেটে বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন। কিন্তু উৎপাদন অক্ষম হলেও প্রতিদিন ২৬৪ মেগাওয়াটের জন্য অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন রামপালের জন্য সরকার গচ্চা দিচ্ছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার টাকা। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ ২০ বছর ধরে হিসাব করলে কেন্দ্রটির মোট গচ্চার পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অকেজো প্রকল্প আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে করতে দিয়েছে শুধু দেশটির স্বার্থে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে কোনো বিশেষ অবদান রাখা তো দূরে থাক কর্মকর্তাদের আকণ্ঠ দুর্নীতি আর অনিয়মে এটি এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিআইডির তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, কেন্দ্রটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রতারক চক্রটি পাওয়ার ম্যাক্স লিমিটেড নামের একটি কাল্পনিক প্রতিষ্ঠানের নামে ভুক্তভোগীদের কাছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরোনো লোহা বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে এক কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। প্রতারণার অংশ হিসেবে তারা মিথ্যা ওয়ার্ক অর্ডার প্রস্তুত করে। অফিস সাজিয়ে ভুক্তভোগীদের বিশ^াস অর্জন করে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে রাজধানীর শ্যামপুর থানায় একটি মামলা হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব সিআইডির কাছে হস্তান্তর হয়। এর আগে এ মামলায় পাঁচজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার আসামি হুমায়ুন কবীরের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সেলিম শেখের সক্রিয় সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশ পায়। আসামি সেলিম শেখ গ্রেপ্তার এড়াতে দীর্ঘদিন বিভিন্ন নামে মোবাইল সিম ব্যবহার করে গা-ঢাকা দিয়ে চলছিল বলেও জানানো হয়।
কিন্তু এই দুর্নীতি কেন্দ্রের কারো সংশ্লিষ্টতা ছাড়া সম্ভব নয় দাবি করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ¦ালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, এর আগেও আমরা জেনেছি কেন্দ্রটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে চুরি-ডাকাতি থেকে শুরু করে কেন্দ্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামালও বিক্রি হচ্ছে। এর আগে এসব জটিলতার পেছনে যেসব কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম কোম্পানির সাবেক প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আবসার উদ্দিনের নাম এসেছিল। সে তো এখন নেই। তাহলে বর্তমানে কারা এসব অবৈধ কাজে ইন্ধন জোগাচ্ছে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খোঁজ নিতে হবে। আবসারের সহায়তার সুযোগে পুরোনো যন্ত্রাংশের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের কাঁধে গছিয়ে দিয়ে গেছে ভারতীয় কোম্পানি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব পুরোনো যন্ত্রাংশই যদি আবার লুকিয়ে বিক্রি হয় তাহলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কি থাকল?
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে যত বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে বাগেরহাটের রামপালে এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অন্যতম। বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ভেঞ্চারে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গরদাশকাঠি মৌজায় প্রায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপর নির্মিত হয় এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের ডিসেম্বর ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে উৎপাদনে যায়। কিন্তু উৎপাদন শুরুর পর থেকেই কখনো কয়লা সংকট, কখনো কারিগরি ত্রুটি লেগেই আছে। উৎপাদন শুরুর প্রথম বছরেই আট মাসে সাতবার নানা কারণে সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়েছে কেন্দ্রটি।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও কেন্দ্রটিতে এখনো বহাল রয়েছেন আগের কর্মকর্তারাই। যদিও চুক্তি অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর এক-তৃতীয়াংশ দেশি কর্মী এখানে বেশি থাকার কথা ছিল কিন্তু এখনো বহাল তবিয়তেই রয়েছেন ভারতীয় কর্মীরা। দেশি-বিদেশি এসব কর্মীর বিরুদ্ধে নিয়মিত উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রটিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)। বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অনিয়ম এবং মালামাল লুটপাটসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে গত ২৬ জুন কেন্দ্রটিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী পরিচালিত অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভারত ও বাংলাদেশের কর্মীদের মধ্যে বেতন বৈষম্যের সুস্পষ্ট প্রমাণ পায়। শুধু তাই নয়, ভারতীয় কর্মীদের জন্য তিন বছর কর মওকুফ থাকলেও বাংলাদেশি কর্মীদের এ ধরনের কোনো সুবিধা নেই।
এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, দুই দেশের নাগরিকদের বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অনিয়ম, কয়লা ক্রয়ে নয়-ছয়সহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রাথমিক সতত্যা পাওয়া গেছে। আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এসবের বাইরে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ঘটছে বিভিন্ন সামগ্রী চুরির ঘটনা। কখনো কয়লা, কখনো বিদ্যুৎ প্রবাহের তার কখনোবা লোহার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ।
এসবের পেছনে কোনো কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে কি না জানতে চাইলে কেন্দ্রের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এইচআর অ্যান্ড পিআর) আনোয়ারুল আজীম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে অভিযোগ আসে। কিন্তু কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি পাওয়া যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ^াসী।
তাহলে দুই দিন পরপর কেন চুরির ঘটনা ঘটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা জানেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশেই নদী রয়েছে। নদী পার হয়ে চোরেরা জীবনের মায়া না করে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় যে তারে সেই তার পর্যন্ত চুরি করে নিয়ে যায়। কয়দিন আগেও কয়লা চুরি করতে এসে দুজন ধরা পড়েছে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
যে কেন্দ্রে সাধারণ মানুষের প্রবেশে শত বিধিনিষেধ সে কেন্দ্রে কীভাবে চোর ঢুকতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রতিটা চুরির ঘটনায় তদন্ত করি। কর্মকর্তা বা কর্মচারী কারো কোনো যোগসাজশ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন্দ্রটি চালুর পরপরই প্রথম গত বছরের ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটের কারণে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই সময় এক মাসের মতো বন্ধ রাখা হয়। এরপর ২৩ এপ্রিল একই কারণে ১৫ দিন বন্ধ রাখা হয়, ৩০ জুলাই সাময়িক বন্ধ রাখা হয় ১৬ দিন। এভাবে প্রতি মাসে কখনো কয়লা সংকট, কখনো যান্ত্রিক ত্রুটিতে কোনো মাসে দুইবারও বন্ধ রাখতে হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে বিব্রত খোদ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, প্রতি মাসেই রানিং বিদ্যুৎকেন্দ্র হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করতে হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক হতে পারে না। কয়লা সংকট ভিন্ন বিষয়, কিন্তু চালুর পর থেকেই কারিগরি ত্রুটি কতবার হতে পারে? এটিকে বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার কোনো মানেই নেই। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের বেশকিছু যন্ত্রপাতিতে সমস্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কেন্দ্রটিতে নিয়মিত চুরির ঘটনা কেন ঘটছে আর এসব অনিয়মের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ অবহিত আছে কি নাÑ জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বেশকিছু প্রকল্প করেছে নিজেদের স্বার্থ বিবেচনায়। যেখানে দেশের স্বার্থ বিবেচিত হয়নি। এই কেন্দ্রটিও এমন একটি প্রকল্প। যেহেতু চুক্তির অধীনে এখনো রয়েছে তাই চাইলেও এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। তবে এটি যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে আমরা সেই বিষয়টি দেখব।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি নিজস্ব ব্যবহার বাদে গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। অন্তত পিডিবি তার নিজের বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে এমন ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরুর পর থেকে কোনো দিন এক মিনিটের জন্যও ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের সমান উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট করে। কিন্তু ৪৫০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট লোডের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বিদ্যুৎকেন্দ্রর বয়লারের মধ্যে থাকা টিউব ফেটে যায়। কেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এই চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুতের টিউব ফেটে কয়েক দিন বন্ধ থেকেছে। এ জন্য পলাতক হাসিনার অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রটির উৎপাদন সব সময় এক হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রের ছাড়পত্র যেহেতু ১২৬৪ মেগাওয়াটের সেহেতু কেন্দ্রটি যাই উৎপাদন করুক না কেন ১২৬৫ মেগাওয়াটের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেওয়া হয়। এতে করে প্রতিদিন রাষ্ট্রে গচ্চা যাচ্ছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে রামপালের এই কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছিল। কেন্দ্রটি থেকে ঢাকায় দৈনিক প্রায় ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বাকি বিদ্যুৎ খুলনায় সরবরাহ করা হতো। কিন্তু বৈশ্বিক ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে না পারায় গত বছরের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বন্ধ করে দেওয়া হয় এর উৎপাদন। এর এক মাস পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ৩০ হাজার টন কয়লা জেটিতে আসার পর আনলোড করে ১৫ ফেব্রুয়ারি আবারও উৎপাদন শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এরপরে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরেকটি জাহাজ আসলে উৎপাদন কিছুটা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু তারপর থেকে একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি লেগেই আছে কেন্দ্রটির। যাকে গলার কাঁটা হিসেবেই বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।