জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত রোডম্যাপ আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ। আর আগামী ১৫-১৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের জন্য একটা অনুষ্ঠান করার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে এর জন্য সবার সহযোগিতা আশা করেছেন তিনি। এ সময় গণভোটে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বুধবার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের শেষ দফার চতুর্থ দিনের আলোচনার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি।
এদিকে গতকাল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের বিরতিতে সাংবাদিকদের নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতিটা হলো, গণভোটের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি, যেটা নিশ্চিত করে যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘গত দিনের আলোচনায় যে অগ্রগতি হয়েছে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এক জায়গায় আসতে পেরেছি একটি ধাপ হিসেবে। আজকের (গতকাল) আলোচনার মধ্যে বাকি যে অংশগুলো আছে, সেগুলো আমরা নিষ্পত্তি করতে পারব। গোটা দেশ অপেক্ষা করছে, আমরা সবাই মিলে এমন একটি ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছাতে পারব, যাতে করে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের পথরেখাটা নির্ধারিত হয়।’
বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট কোনো প্রস্তাব যদি আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে বলে জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘সবার প্রচেষ্টায় অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে, গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমতে আসতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘গণভোট অনুষ্ঠানের একটি সময়সীমা যদি রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করতে পারে, কমিশনের কাজ তাতে সহজ হবে। আমরা আশা করছি, আজকে (গতকাল) এই জায়গায় আমরা চূড়ান্ত করতে পারব। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয়, আরও এক দিন, বড়জোর দুই দিন এর জন্য ব্যয় করতে পারব। কিন্তু ১০ তারিখের (অক্টোবর) মধ্যে আমরা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে চাই। আমরা আশা করছি সেটা দিতে পারব।’
নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়ে নভেম্বর গণভোট দিতে হবে। এর মাধ্যমেই ফেব্রুয়ারিতে হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
গতকাল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের বিরতিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. তাহের বলেন, ‘নভেম্বরের ১৮-১৯ তারিখে গণভোট হতে পারে। আর ডিসেম্বরের শুরুতেই সংসদ নির্বাচনের তপশিল। আমরা মনে করি, এটি হবে সবচেয়ে কম ঝুঁকির ভোট। অতীতে ১৯ দিন ও এক মাসের মধ্যেই গণভোট হয়েছে। এক খরচেই হবে জাতীয় নির্বাচন। শুধু ব্যালটের পরিবর্তন হবে। আশা করি এর মাধ্যমে জনগণ একটি গ্রহণযোগ্য ভোট পাবে, যা হবে উৎসবমুখর। তাই এ বিষয়েই বিএনপিকে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।’