ফুটবল ইতিহাসে হংকংয়ের বিপক্ষে এখনো কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত তাদের বিপক্ষে চারটি ম্যাচ খেলে একটিতেও জয়ের মুখ দেখেনি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এর মধ্যে দুটি ম্যাচে ড্র, অপর দুটি ম্যাচে হেরেছে তারা। সর্বশেষ ২০০৬ সালের এশিয়ান কাপের ম্যাচে দুই দল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল। ২০ বছর আগে দুই ম্যাচের একটিতে (হোম ম্যাচ) হংকংয়ের কাছে ১-০ গোলে হার মানে বাংলাদেশ। অপর ম্যাচ (অ্যাওয়ে) গোলশূন্য ড্র হয়। তবে এবার ইতিহাস বদলে দিতে চায় দেওয়ান হামজা, শমিত সোমদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশের ‘হাই-প্রোফাইল’ দল।
আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপের তৃতীয় রাউন্ডের বাছাইপর্বে হংকংয়ের বিপক্ষে হোম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। রাত ৮টায় দুই দলের ম্যাচটি শুরু হবে। এ ম্যাচে হংকংকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে স্বাগতিকেরা। হংকং ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের প্রাণ হামজা চৌধুরী বলেছেন, হংকংকে হারাতে বদ্ধপরিকর তারা। শুধু হংকংই নয়, অন্য দলকেও হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের বৈতরণি পেরিয়ে মূল পর্বে ওঠার টার্গেট তাদের। বাছাইপর্বে ‘সি’ গ্রুপের টেবিলে সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের অর্জন পয়েন্ট ৪ করে। তিন ম্যাচে বাংলাদেশ ও ভারতের পয়েন্ট ১ করে। বাছাই পেরোনোর নিভু নিভু স্বপ্নে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে ঘরের মাঠে হংকংয়ের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।
হামজা-শমিতদের ঘিরেই ফুটবলের নতুন জাগরণ হয়েছে। আর তাতেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। এবার দলকে সামনের পথ দেখানোর মূল দায়িত্ব থাকছে যথারীতি হামজার কাঁধে। গত মার্চে শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। ওই ম্যাচে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ঘরের মাঠে খেলা প্রথম ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যায় তারা। ফলে বাছাইপর্বে এখনো জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি হামজাদের। আজ সেই অধরা স্বাদ পেতে মরিয়া বাংলাদেশ। হামজা ও শমিতকে ছাড়াই হংকং ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করে দেয় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
এবার তৃতীয়বারের মতো খেলতে এলেন ইংল্যান্ড-প্রবাসী মিডফিল্ডার হামজা। কানাডা-প্রবাসী শমিত দ্বিতীয়বারের মতো খেলবেন বাংলাদেশের জার্সিতে। আগের চেয়ে এবার কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও সতীর্থদের বোঝাপড়া বেশি হয়েছে বলেই বিশ^াস করেন ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা, যেটা তাকে অতীতের চেয়ে করে তুলছে আরও বেশি আত্মবিশ^াসী। হামজা বলেন, ‘ইনশাল্লাহ আমরা জিতমু। হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ের খুব ভালো সুযোগ আছে। আমি কোচের সঙ্গে কথা বলছি।
আমাদের মেধা আছে, আগ্রাসী মনোভাব আছে, অনেক আত্মবিশ^াস আছেÑ ইনশাল্লাহ আমরা উইনিং টিম হমু।’ এদিকে, হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শমিতও। তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী, আমরা ভালো করতে পারি। ভালো খেলা হবে, তারা কঠিন দল। তাই দেখি কী রকম হয়। তবে আমরা ভালো করতে পারি, দুই খেলায়ই জিততে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তুতি সবচেয়ে ভালো হবে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আমি খুব রোমাঞ্চিত।’ হংকং ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবে গত সেপ্টেম্বরে নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। জেন-জির বিক্ষোভে দেশটির সরকারপতনে দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠেই গড়াতে পারেনি। প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল গোলশূন্য ড্র।