পিআর (সংখ্যানুপাতিক) নিয়ে চলমান আন্দোলন উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন অফিসে খ্রিষ্টান ফোরামের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করার বিষয়টি পরিষ্কার নয়। বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত হয়নি সেগুলো নির্বাচনি ইশতেহারে আসবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন; কিন্তু এখন বাংলাদেশকে একটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার বিভিন্ন রকমের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে তারা আশা করছেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবে যে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক। আর তারা বাংলাদেশি জাতীয়তা বিশ্বাস করে।
আগামী নির্বাচনে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নির্বাচিত হলে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘুদের সমস্যা আগে সমাধান করা হবে। কেউ কেউ ৭১ এর পরিচয়কে ভুলিয়ে দিয়ে নতুন চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আমরা সবাই বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক দেশ। জাতি হিসেবে এটাকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। এই কথাগুলো তাঁরা যখন সামনে আনেন, তখন একটা চেতনা, একটা ধারণা তৈরি হয়। সেই চেতনা-ধারণাকে তাঁরা ধারণ করতে চান বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা এ কথা খুব পরিষ্কার করে ও অত্যন্ত উচ্চ কণ্ঠে বলতে চাই, উচ্চ কণ্ঠে উচ্চারণ করতে চাই যে, আমরা বাংলাদেশি এবং ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করে আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে এসেছি। এটা আমাদের বলতে হবে, প্রতিমুহূর্তে মনে রাখতে হবে।
মতবিনিময়ে খ্রিষ্টান ফোরামের নেতারা তাঁদের একজনকে আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই আবেদন দলীয় প্রধানের কাছে পৌঁছে দেবেন। বিষয়টিকে তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’ রোজারিও, কোর দ্য জুট ওয়াকস্-এর পরিচালক রীতা রোজলিন কস্তা, দ্য মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রতাপ অগাস্টিন গোমেজ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, বিএনপি ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট জন গোমেজ, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া, দ্য খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের (ঢাকা) প্রেসিডেন্ট মাইকেল গোমেজ, খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মৃগেন হাগিদক, মন্টু পিটার রোজারিও ও ফনিন্দ্রনাথ কর্মকার প্রমুখ।