বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি আদায়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনরত শিক্ষকেরা আজ মঙ্গলবার ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করবেন। একই সঙ্গে বর্ধিত ভাতার প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত চলমান কর্মবিরতির কর্মসূচিও চলবে।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সোমবার (গতকাল) রাতের মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন বা দাবি মানার ঘোষণা না দেওয়া হয় তাহলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে মার্চ টু সচিবালয় কর্মসূচি পালন করা হবে। একই সঙ্গে চলমান কর্মবিরতির কর্মসূচিও চলবে।’
এদিকে গতকাল শহীদ মিনারে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সরকারকে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলগুলোর নেতারা। গতকাল দুপুরের দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, নাগরিক ঐক্য ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনে একাত্মতা জানান। অন্যদিকে গতকাল দেশের অধিকাংশ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকেরা। তবে কোথাও কোথাও ক্লাসও হয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলার তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে রাজধানীর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসাবো শাখার শিক্ষক মেজবাহুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলছে। এখানে শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন না।’ তবে রাজধানীর ধানমন্ডির মেহেরুন্নিসা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রভাষক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আর মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কলেজে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। তবে উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ ছিল।
এর আগে গত রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা বাড়ানোর দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। ওইদিন দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পুলিশ। একই সঙ্গে লাঠিপেটা করা হয় শিক্ষকদের। এতে কয়েকজন শিক্ষক গুরুতর আহত হন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ায় সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকেরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন। এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।