শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ১২:০৭ এএম

নতুন পরিস্থিতিতে নির্বাচন, কঠিন চ্যালেঞ্জে ইসি

স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ১২:০৭ এএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেখলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন এই প্রথম। আগে শুধু বড় দুটি রাজনৈতিক দলেরই নির্বাচনে আধিপত্য ছিল। গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্রদের নেতৃত্বে নতুন করে তৈরি হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), যাদের শক্তিশালী ভূমিকা থাকবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।

এ ছাড়া বিগত ১৫ বছরে আলোর নিচে থাকা ইসলামি দলগুলোও রাজনীতির মাঠে পুরোদমে সক্রিয় হয়েছে। কোনো দলের এখন পর্যন্ত জোটবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা না আসায় প্রত্যেকেই নিজ নিজ রাজনৈতিক শক্তি প্রকাশ করতে মরিয়া। এমন পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে।

যদিও নির্বাচন কমিশন দাবি করছে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবেই নির্বাচন পরিচালিত হবে, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নির্বাচন ঘিরে সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে কমিশনকে কঠোর হওয়ারও পরামর্শ তাদের।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক বহু উত্থান-পতন ঘটলেও সাম্প্রতিক সময়ের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারকে দেশত্যাগে বাধ্য হতে হয়েছে। এরই সঙ্গে ভেঙেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সেই সরকারের অধীনে গঠিত সংসদও, যা বিশে^র ইতিহাসে নজিরবিহীন। দেশের এমন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটার ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ১৭১ জন। খসড়া ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮টি আর ভোটকক্ষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ জনবল প্রস্তুত করা হচ্ছে।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) অপপ্রয়োগ রোধে তথ্য যাচাই সেলের কাঠামো, জনবল, প্রতিটি শিফটে প্রয়োজনীয় কর্মীর সংখ্যা এবং সমন্বয় প্রক্রিয়া চলছে। পাহাড়ি অঞ্চল বা দুর্গম দ্বীপাঞ্চলের মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উদ্ভূত ভুল তথ্য মোকাবিলাকে চ্যালেঞ্জ মনে করলেও তা বাস্তবায়নেও প্রস্তুত রয়েছে নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানটি। নির্বাচনে অপতথ্য রোধে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং ব্যবস্থার পাশাপাশি নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিতদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, এআইয়ের অপব্যবহার এখন বৈশ্বিক মাথাব্যথা। যে কোনো যন্ত্রের মতো এটি ভালো কাজের জন্য যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি খারাপ কাজের জন্যও করা যায়।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় নির্দিষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক সুপারিশ যে কেউ দিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রোধ এবং নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন এআই প্রযুক্তি একীভূত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। ব্যবস্থাটি এমন হতে হবে, যা গভীর রাতেও উদ্ভূত মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত ও মোকাবিলায় সক্ষম হবে। এটি হবে ২৪ ঘণ্টার কাজ। নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করতে হবে, কী ধরনের পেশাজীবী এতে যুক্ত করা হবে, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে এবং কোন সংস্থা এতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, ‘এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে কাজ করছে কমিশন। এরই মধ্যে আমরা সাংবাদিক, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছি।’

প্রতীক নিয়ে এনসিপির বিরোধিতা

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করলেও এরই মধ্যে ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। ইসি-এনসিপি দুই পক্ষই এ ক্ষেত্র অনড় অবস্থানে থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা ঘোলাটেও হওয়ার আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

হাসিনা সরকারের পতনে নেতৃত্বদানরকারীদের নিয়ে গঠিত দলটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলেও প্রতীক না পাওয়ায় নিবন্ধন সনদ পাচ্ছে না। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাওয়ার সব যোগ্যতা অর্জন করলেও শুধু  প্রতীক না পাওয়ায় নিয়মিত ক্ষোভ প্রকাশ করে যাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নিজেদের পছন্দের প্রতীক হিসেবে শাপলা পেতে মরিয়া দলটি।

কিন্তু ইসির তালিকায় এই প্রতীক না থাকার কারণে কোনোভাবেই এটি দেওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে ইসি। প্রয়োজনে ইসি নিজ উদ্যোগেও প্রতীক দেওয়ার কথা বলছে, যা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন এনসিপির নেতারা। ইসি বলছে, আগামী রোববারের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা বিধির তপশিলে থাকা নির্ধারিত তালিকা থেকে দলের প্রতীক বাছাই করে জানাতে ব্যর্থ হলে ‘স্বীয় পদ্ধতিতে’ এনসিপিকে মার্কা দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, এনসিপিকে শাপলা দেওয়ার সুযোগ নেই। ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনসিপির শাপলা প্রতীকের বিকল্প প্রতীক বাছাইয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথা ছিল। তারা এখনো তা দেয়নি। তাই বিধি মোতাবেকই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু শাপলা প্রতীক বরাদ্দ পেতে মরিয়া এনসিপি নেতারা।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, এনসিপির মার্কা শাপলা। শাপলা দিতে হবে। এর পরই এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নিজের ফেসবুক পেজে ওই পোস্ট শেয়ার করেন। একই সময়ে এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেইসবুকে লেখেন, এনসিপি শাপলাই পাবে।

দলের যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা লেখেন, বিষয়টা শুধু শাপলা প্রতীক ইস্যু না। ব্যাপারটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সক্ষমতা প্রমাণের। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এনসিপিকে কেন শাপলা দেওয়া হবে না, সেটা তিনি জনগণের কাছে ব্যাখ্যা করবেন না। শাপলা প্রতীক এনসিপিকে বরাদ্দ না দেওয়া ইসির ‘মন-মর্জি’র বিষয় কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন এই এনসিপি নেতা।

এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় দলটির প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে তৈরি হওয়া এই সংকট নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্দুল লতিফ মাসুম রূপালী বাংলাদেশ-কে বলেন, আপনি যদি মনে করেন এটা বড় বিষয়, তাহলে এটা বড় বিষয়। আমার মনে হয়, এটা খামোখাই একটা ইস্যু তৈরি করছে। এনসিপি একটা অন্যায় আবদার নিয়ে ‘গো’ ধরে বসে আছে; এটা ঠিক না।

‘ইসির তালিকায় যেহেতু শাপলা নেই, তাহলে তো দেওয়া সম্ভব নয়। তারা গোলাপ ফুল বা অন্য কিছু নিক। তা না করে তারা শাপলার জন্যই বসে আছে। গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া দলটির কাছে এমন আশা করা যায় না। আমরা চাই না আসন্ন নির্বাচনে শুধু এই একটা ইস্যু নিয়ে কোনো ধরনের অরাজকতা তৈরি হোক। সুষ্ঠু এবং একটি সুন্দর নির্বাচনের জন্য জাতি অপেক্ষা করছে। আশা করি এনসিপি কম্প্রোমাইজে আসবে। তবে এনসিপির প্রতীক ইস্যুতে অনড় অবস্থানকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন না বিএনপি নেতা ড. আব্দুল মঈন খান।’

রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, যে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের দাবি জানাবে, এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যদি সবাই একমত হয়ে যায়, তাহলে তো সেই আবার ‘বাকশাল’ নীতি হয়ে যাবে। তবে আমি মনে করি, ইসি নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সিদ্ধান্ত নেবে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ:

যেহেতু দেশে রাজনৈতিক একটা অস্থিরতা বিরাজমান, সেহেতু নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে ভোটের মাঠে পাঁচ দিন তাদের রাখার পরিকল্পনা ইসির থাকলেও তা আট দিন করার পরিকল্পনা করা হয়। ভোটের আগে তিন দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের চার দিন নিরাপত্তায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুধু তাই নয়, অপব্যবহার রোধ, ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং পুলিশের ইউনিফর্মে ক্যামেরা রাখা হবে বলেও জানানো হয়।

এসব বিষয় নিয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করি, নির্বাচন পরিচালনা নিয়ে কাজ করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। কিন্তু অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার যতই প্রাসঙ্গিকতা থাকুক না কেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যে ভয়াবহতা, তার প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে বিশ্বে ৯২ শতাংশ নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা একটি ভালো অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই অপপ্রযুক্তি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সটাকে একটু ব্যঙ্গ করে বলছি, অপপ্রযুক্তি রোধের ক্ষেত্রে আপনাদের সবার সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী সিভিল পাওয়ার নিয়ে উপস্থিত থাকবে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আখতার বলেন, “এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ আছে, কিন্তু এটার সঙ্গে আরপিও সাংঘর্ষিক যেন না হয়, সেটা আমরা খেয়াল রাখব।”

নির্বাচন নিয়ে কোনো ঝুঁকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখছে কি না এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটুকু ভোটের উপযোগী, জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা হচ্ছে তপশিল ঘোষণা থেকে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত। আমাদের আলোচনার পরিধিটা এটুকু ছিল। বাকিটুকু নিয়ে আলোচনার এই মুহূর্তে সুযোগ নেই এবং আমরা করিওনি। আমি তাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখিনি, বরং দেখেছি যে তারা একটা ভালো ইলেকশন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তবে চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছিল থানাগুলো থেকে, সেগুলো এখনো শতভাগ উদ্ধার হয়নি। তাই একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। বৈধ অস্ত্রও জমা দেওয়ার হার কম।

এ ছাড়া, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে যে মব কালচারের সৃষ্টি হয়েছে, নির্বাচনের সময় যদি কোনো আওয়ামীপন্থি লোক ভোট দিতে আসে, তাকে ঘিরে যদি কোনো মব সৃষ্টি করা হয়, তাহলে সেটা মোকাবিলা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বা সরকারের বক্তব্য শুনে মনে হয় নির্বাচনটা শুধু ঢাকায় হবে। কিন্তু এক দিনে নির্বাচন সারা দেশেই হবে। সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচন হয়তো হবে, কিন্তু তা পূর্বের মতোই প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে। যারা সাবেক সরকারের নেতা বা সমর্থক ছিল, তাদের বিরুদ্ধে তো মামলা হয়েছেই। কিন্তু যারা সাধারণ কর্মী, সেই সরকারের অনৈতিক কোনো কাজকে সমর্থন দেয়নি, তাদের যদি মবের মধ্যে পড়তে হয়, তা অপ্রত্যাশিত।

সর্বময় ক্ষমতা থাকছে ডিসিদের হাতেই :

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থাটি। ইতিমধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ হয়েছে। চলছে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজ। ভোটার তালিকাও প্রায় শেষের পথে। নির্বাচনি আচরণ সংশোধন হয়ে গেছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের কাজও চলমান।

এত সব কিছুর মতো নির্বাচন পরিচালনা কারা করবে, তা নিয়েও ভাবছে ইসি। আগের মতো ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের কথা ভাবছে কমিশন। ফলে প্রশাসনের এই কর্মকর্তাদের হাতেই থাকছে ভোটের সর্বময় ক্ষমতা। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তাই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।

নির্বাচন কমিশন কেবল পলিসি নির্ধারণ করে থাকে। বাস্তবায়নের প্রায় পুরো দায়িত্ব ও ক্ষমতা থাকে তাদের। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও সুপারিশ আসতে হয় রিটার্নিং কর্মকর্তার মাধ্যমেই। ফলে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের ওই পদে নিয়োগ করে নির্বাচনকে সরকারের হাত থেকে মুক্ত করার যে দাবি, তা আর বাস্তবায়ন সেই অর্থে হচ্ছে না।

এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বড় জেলায় যেখানে বেশি আসন আছে, সেখানে একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। এখন ইসির কর্মকর্তারা অনেক অভিজ্ঞ হয়েছেন। অন্তত ১৪, ১৫ জনকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

Link copied!