চট্টগ্রামে গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ২৯ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে এবি ব্যাংকে কর্মরত নারী কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম অনামিকা দত্ত (৩২)।
বুধবার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানার নিউমার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি চট্টগ্রামের সদরঘাট থানার উত্তর নালাপাড়ার বাসিন্দা সুহৃদ বরণ দত্তের মেয়ে এবং এবি ব্যাংকের জুবলি রোড শাখায় কর্মরত ছিলেন।
কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ তারিকুল ইসলাম জানান, প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অনামিকা দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে ১০ নভেম্বর দেবীকা চৌধুরী নামে এক নারী অনামিকা দত্ত, তার বাবা সুহৃদ বরণ দত্তসহ অজ্ঞাতনামা আরও এক থেকে দুজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় প্রতারণার মামলা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেবীকা চৌধুরী পরিবারসহ দীর্ঘদিন ধরে পটিয়ায় বসবাস করেন এবং এবি ব্যাংকের স্টেশন রোড শাখায় লেনদেন করতেন। সেখানেই তার সঙ্গে অনামিকা দত্তের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে অনামিকা তার আস্থা অর্জন করেন এবং একপর্যায়ে জানান, ব্যাংকটি দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। পরে তিনি দেবীকাকে পরামর্শ দেন তার নামে থাকা এফডিআর ভেঙে ফেলতে।
এরপর ৫ অক্টোবর অনামিকা দত্ত প্রতারণার মাধ্যমে এবি ব্যাংকের আন্দরকিল্লা শাখা থেকে দেবীকার এফডিআর হিসাবের ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৫ টাকা নিজের নামে স্থানান্তর করেন। পরে ৭ অক্টোবর একই কৌশলে জুবলি রোড শাখা থেকে আরও ১৪ লাখ টাকা তুলে নেন। এভাবে মোট ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৫ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
লেনদেনের পর দেবীকা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি স্বামীকে জানালে তিনি অনামিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত চান; কিন্তু অনামিকা নানা অজুহাতে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম জোনাল কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘অনামিকা দত্ত ব্যাংকের স্থায়ী কর্মকর্তা নন। টাকা লেনদেনের বিষয়টি তার আত্মীয়ের সঙ্গে ঘটেছে।’
তবে বাদী দেবীকা চৌধুরী দাবি করেছেন, অনামিকা তার কোনো আত্মীয় নন। তিনি বলেন, ‘আমি চৌধুরী, আর অনামিকা দত্ত; আমাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তা নেই। এবি ব্যাংকের জুবলি রোড শাখায় লেনদেন করতে গিয়েই তার সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানে তিনি ডেস্কে বসে নানা বিষয়ে সাহায্য করতেন। কিন্তু এভাবে প্রতারণা করবেন, তা কখনো ভাবিনি।’

