ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ১০ হাজার মানুষ

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সীমান্তবর্তী শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের খাড়ামোড়া এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বলা যায় একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন এ এলাকার বাসিন্দারা।

ভারতের মেঘালয়ের কোলঘেঁষা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাড়ামোড়া গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দার কাছে খরস্রোতা সোমেশ্বরী নদী এখন এক চির দুঃখের নাম। খাড়ামোড়া গ্রামটি মূলত কৃষিনির্ভর। তাই নদীর ওপর সেতু না থাকায় পণ্য আনা-নেওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এ নদীর ওপর দিয়ে আশপাশের বালিজুরী, তাওয়াকুচা, বালিজুরী ফরেস্ট রেঞ্জ, গুরুচরণদুধনই, মালাকোচা, বিলভরট, কালিবাড়িসহ আশপাশের ১২টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ নদীর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে।

তা ছাড়া সোমেশ্বরী নদীর কোল ঘেঁষেই বালিজুরী উচ্চ বিদ্যালয়, খাড়ামোড়া দাখিল মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। বালিজুরী বাজার থেকে খাড়ামোড়া ও রাঙ্গাজান গ্রামের শেষ প্রান্ত ভারতীয় সীমানার দূরত্বও প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার। সেতু না থাকায় যাতায়াতে করুন অবস্থা স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকায় এ এলাকার বাসিন্দাদের দুর্বিষহ যাতায়াতের সংবাদ একাধিক বার প্রকাশিত বা প্রচারিত হলেও দৃষ্টিগোচর হয়নি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এদিকে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে গমনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারণ বর্ষাকালে সোমেশ্বরী নদী ভয়ংকর খরস্রোতা রূপ ধারণ করে। তখন নদীর দুপাড়ে দড়ি বেঁধে, সে দড়ি ধরে নৌকা দিয়ে মানুষ জন পারপার হয়। আর শুকনো মৌসুমে ছোট্ট জরাজীর্ণ একটি কাঠের সাকো দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত ভ্যান অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ইত্যাদি যানবাহন কয়েক জনে ঠেলে পার হতে হয়। অথচ কয়েকশ ফুটের একটি সেতু বদলে দিতে পারে এ অঞ্চলের চিত্র।

ক্ষোভ প্রকাশ করে এক ভ্যানচালক বলেন, ‘বহুত ইন্টারভিউ দিছি, কাম কিছুই অয় নাই, রাজনৈতিক নেতারা ভোট আইলে বড় বড় কতা কয়! ভোট গেলে খোঁজ নাই’।

আরেক বাসিন্দা ৮০ বছর বয়সি বাসিন্দা মো. গোলাম মাওলা বলেন, খুব কষ্টে আছি। পাকিস্তান আমল থাইকা আজ পর্যন্ত কেউ কোনো খোঁজ নেয় না। ওই সরকারি লোক দুচার জন আসে দেইখা দোখ্যা চই্যল্লা যায়। মালামাল পার করতে হলে কান্দে কইরা বাঁশ দিয়া পার করতে অয়। একটা ব্রিজ আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। রোগী পার করতে কষ্ট অয়। পোলাপান স্কুলে যাইতে পারে না। অহন শুকনা মৌসুম তাই কাঠের সাঁকো দিয়ে কোনো রকম পার হইতাছি। বর্ষায় আর পার হওয়া যায় না।

মিল্লাত নামে স্থানীয় এক ছাত্র বলেন, আমাদের নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। গাড়ি পার করতে পারি না। একটা ব্রিজ সরকারে করে দিলে ভালো হয়।

এ ব্যাপারে শেরপুরের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেতু প্রকল্প প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।