ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ০২:৫৮ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।’ এক্ষেত্রে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এক-দুদিন পরে কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এক-দুদিন আগেও হতে পারে। অর্থাৎ মাঝামাঝি কোনো সময় হতে পারে। ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ রোববার এবং ফেব্রুয়ারি ১২ তারিখ বৃহস্পতিবার। সে হিসেবে মঙ্গলবারের দিকে সংসদ নির্বাচন হতে পারে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এদিকে আগামী সপ্তাহের রোববার ভোট নিয়ে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে দু-তিন দিন সময় রেখে বা ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবারের মধ্যে তপশিল ঘোষণা করা হতে পারে।

এবার সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটও হতে যাওয়ায় ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে ভোটকক্ষে ভোট দেওয়ার যে গোপনকক্ষ থাকে তা দ্বিগুণ করার ভাবনা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের ভোটটা সঠিকভাবে, সঠিক সময়ে করার ক্ষেত্রে গণনা যাতে বিলম্বিত না হয়Ñ কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

নিজেদের প্রস্তুতি যাচাই করতে গত শনিবার ঢাকার শেরে বাংলানগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোটের মহড়া করে ইসি। তাতে দেখা যায়, সংসদ নির্বাচন ও গণভোট পৃথক ব্যালটে হওয়ায় ভোটারদের তুলনামূলক বেশি সময় লাগছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো এবং ভোটকক্ষের গোপনকক্ষ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা চলছে জানিয়ে ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘মক ট্রায়ালে যে অভিজ্ঞতা হলো- ভোটারদের ভোট দিতে একটু সময় লাগে; যার কারণে লাইন লম্বা হয়ে যেতে পারে। ভোটগ্রহণ ত্বরান্বিত করতে ভোটকক্ষ দুটি পার্ট করে ডাবল করা যায় কীভাবেÑ এতে মার্কিং সিল দেওয়ার গোপনকক্ষ বাড়বে। পাশাপাশি ভোটের সময় বাড়াতে পারি কি না আমরা ভাবছি।’

সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা ভোটগ্রহণ করা হয়ে থাকে। সেই সময় আগে-পরে কিংবা পরে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে ৯ ঘণ্টা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অর্থাৎ এখন সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হয়, সেটা সাড়ে সাতটা হতে পারে। আবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়, সেটা সাড়ে চারটা করার কথা ভাবা হচ্ছে।

এবার প্রায় ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে ২ লাখ ৪৪ হাজার ভোটকক্ষ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। সাধারণত প্রতিকক্ষে ভোট দেওয়ার একটি গোপনকক্ষ থাকে। তবে এবার দুই ব্যালটে ভোট দিতে সময় বেশি লাগায় গোপনকক্ষ দ্বিগুণ করার ভাবনা রয়েছে ইসির।

ইসি আনোয়ারুল জানান, রোববারের কমিশন সভায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময়, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় ও ভোটের দিন চূড়ান্ত করতে চায় ইসি। এরপর আনুষ্ঠানিকতা সেরে সপ্তাহের যে কোনো দিন তপশিল ঘোষণা করা হবে। আর ভোটের দিন ঠিক করতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের পূর্বাভাস চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, গণভোটের জন্য সুনির্দিষ্ট দিন ঠিক করে তপশিল হবে। তবে সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমার সময় থেকে ভোটগ্রহণের মধ্যে এবার ব্যবধান দুই মাস রাখতে চায় ইসি। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমা এবং বাছাইয়ে তুলনামূলক বেশি সময় রাখা হতে পারে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তির সময় মাথায় রেখে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় দেওয়া হয়ে থাকে। প্রচারের জন্য সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ সময় দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে ১৮-১৯ দিন সময় দেওয়া হয়, কারণ ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে শেষ করতে হয় প্রচার।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম গতকাল বলেন, ‘নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। তপশিল ঘোষণার দিন-তারিখও পরবর্তী কমিশন সভায় আমরা বসে সুনির্দিষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নেব।’