শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৩:১৯ এএম

তারিক সিদ্দিক পরিবারের নামে বিপুল অবৈধ সম্পদ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৩:১৯ এএম

তারিক সিদ্দিক পরিবারের  নামে বিপুল অবৈধ সম্পদ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে আলাদা চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ এসব মামলা দায়ের করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মামলা দায়েরের এ তথ্য দিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ’ ২৮ কোটি ৫৯ লাখ ৬৩ হাজার ২৩২ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে তার এ সম্পদ অর্জনের তথ্য মিলেছে। এ ছাড়া তারিক আহমেদের চারটি ব্যাংক হিসাবে ৬২ কোটি ৬০ হাজার ৯৮৩ টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন করার বিষয় তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে’ অর্জিত অর্থ জমা ও উত্তোলন করা হয়েছে এসব ব্যাংক হিসাবে।

দুদক বলছে, এই ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন করে তিনি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য ‘অপরাধ’ করেছেন। তদন্তের বরাতে দুদক বলেছে, তারিক আহমেদের নামে অর্জিত বা মালিকানাধীন স্থাবর সম্পদের মূল্য ২৪ কোটি ৬০ লাখ ২৪ হাজার ৭৭৪ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মূল্য ১৯ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৮৬২ টাকা। মোট সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৬ টাকা।

তার পারিবারিক ব্যয় ৫ কোটি ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৬৫ টাকা এবং দায়-দেনা ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা হিসেবে ধরা হয়েছে। এই হিসাবে তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ কোটি ৬৫ লাখ ৪ হাজার ৪০১ টাকা। অথচ তার ‘বৈধ আয় ও দায়সহ সর্বমোট গ্রহণযোগ্য আয়’ ২০ কোটি ৫ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা। মামলায় বলা হয়েছে, তারিক সিদ্দিকের অর্জিত সম্পদের মধ্যে ২৮ কোটি ৫৯ লাখ ৬৩ হাজার ২৩২ টাকার উৎস অস্পষ্ট এবং তা ‘জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে।

স্ত্রী ও কন্যাদের বিরুদ্ধেও মামলা: বাকি তিনটি মামলায় স্ত্রী ও দুই কন্যার সঙ্গে তারিক সিদ্দিককেও আসামি করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর বাদী হয়ে করা এ দ্বিতীয় মামলায় তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ২১৩ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তার ১১টি ব্যাংক হিসাবে ৫৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৭ টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথা বলেছে দুদক।

তারিক সিদ্দিকের মেয়ে নুরিন তাসমিয়া সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ১৯২ টাকার অবৈধ সম্পদের মামলা করেছেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন। তার আরেক মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। এসব মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তদন্তকালে নতুন কোনো তথ্য উদঘাটিত হলে অথবা অপরাধে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে মামলায় তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা ছিলেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক। গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তার পরিবারের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করে দুদক। তার আগে গুমের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের তালিকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে তারিক আহমেদের নামও রয়েছে।

রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের ‘আর্থিক অনিয়মের’ যে অভিযোগ উঠেছে, সেখানে তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের ‘প্রচ্ছায়া’ কোম্পানির নাম এসেছে। ইতিমধ্যে তিন বিমানবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আলাদা চারটি মামলা করেছে দুদক। 

আদালত তারিক আহমেদ সিদ্দিক, শাহীন সিদ্দিক এবং তাদের মেয়ে নুরিন সিদ্দিকের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ১৩টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে। এসব হিসাবে ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৬৭ হাজার ২৭১ টাকা রয়েছে। তাদের ২৪ বিঘা জমিসহ ৫টি প্লট ও ৫টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেয় আদালত। জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে বারিধারার ডিওএইচএসের ৭ তলা বাড়ি, একই এলাকার ৭ তলা আরেকটি ভবনের তিনটিসহ পাঁচটি ফ্ল্যাট, পূর্বাঞ্চলের নতুন শহরে ২০ কাঠা জমির ৪টি প্লট এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি প্লট।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!